ইউক্রেনের নিপ্রো বিমানবন্দর ধ্বংস হলো রুশ হামলায়
রাজধানী কিয়েভ ও এর পার্শ্ববর্তী শহরগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিলেও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর নিপ্রোতে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে ধ্বংস হয়েছে একটি বিমানবন্দর।
এতে অন্তত পাঁচ জরুরি উদ্ধারকর্মী আহত হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা এমনটাই দাবি করেছেন। তবে ইউক্রেনের এই দাবির ব্যাপারে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি মস্কো।
রবিবার (১০ এপ্রিল) নিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চলের গভর্নর ভ্যালেন্টিন রেজনিচেঙ্কো এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলেন, নিপ্রো বিমানবন্দরে হামলা হয়েছে। হামলায় বিমানবন্দরের কিছুই অবশিষ্ট নেই। বিমানবন্দর এবং এর আশেপাশের অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে ক্রমাগত রকেট উড়তে দেখা যাচ্ছে।
এর আগে পার্শ্ববর্তী পালভোহ্রাদ শহরে একটি ভবনে আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। রেজনিচেঙ্কো বলেছেন, দিনিপার নদীর তীরে অবস্থিত শহরটিতে রোববার থেকে রুশ আক্রমণ আরও তীব্র হয়েছে। শিল্পনগরীটিতে ১০ লাখ মানুষ বসবাস করে। শহরটি শুরু থেকে রাশিয়ার অভিযানের টার্গেট হলেও রোববারের আগ পর্যন্ত এত বড় বিপর্যয়ে পড়েনি।
এদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন বড় ধরনের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইল পদোলিয়াক। রবিবার টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে মস্কো বাহিনীকে অবশ্যই পরাজিত করতে হবে।’
এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা দফতর জানায়, ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনাগুলোতে নতুন করে হামলা শুরু করেছে মস্কো। তাদের দাবি, শনিবার (৯ এপ্রিল) রাতে ইউক্রেনীয় সেনাদের ৮৬টি ঘাঁটিতে সফল অভিযান চালানো হয়েছে। গোলা ছোড়া হয় পূর্বাঞ্চলের নিপ্রো, দক্ষিণাঞ্চলের মাইকোলাইভ আর দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৪৬ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৪৭তম দিন। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/