কে এই শেহবাজ শরিফ
পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের নিষ্পত্তি হওয়ার কথা রয়েছে আজ শনিবার (৯ এপ্রিল)। এর মধ্যেই নেতা শেহবাজ শরিফকে বিরোধী জোট প্রধানমন্ত্রী বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) শেহবাজ জানান, শনিবারের অনাস্থা ভোটে ইমরান খানকে পরাজিত করা গেলে বিরোধী জোটের পক্ষ থেকে তিনিই দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন।’ তাকে এ পদে মনোনয়নও দেওয়া হয়েছে।
পার্লামেন্টে সমর্থনের যে হিসাব-নিকাশ দাঁড়িয়েছে, তাতে ইমরানের প্রস্থান এখন অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে। আর ইমরান সরে গেলে তার জায়গায় উত্তরসূরি হিসাবে শেহবাজের নামটাই ঘুরেফিরে আসছে সবার ওপরে।
শেহবাজ শুধুমাত্র পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক নেতা নন। তার আরও একটি পরিচয় হল, তিনি সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই। দেশের বাইরে শেহবাজ তেমন পরিচিত না হলেও দেশের ভেতরে প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য তার সুনাম আছে।
শেহবাজের জন্ম পঞ্জাবের লাহোরে। এক পাঞ্জাবি-কাশ্মীরি পরিবারে তার জন্ম। বাবার নাম মুহাম্মদ শরিফ, যিনি পাকিস্তানের নামকরা ব্যবসায়ী এবং উদ্যোগপতি। শেহবাজও একজন ব্যবসায়ী। একাধিক ব্যবসা রয়েছে তার নামে। পারিবারিক স্টিল ব্যবসা রয়েছে। লাহোরের গর্ভমেন্ট কলেজ-ইউনিভার্সিটি থেকে আর্টসে স্নাতন করেছেন শেহবাজ। ব্যবসা করতে করতেই ১৯৮৫ সালে লাহোর চেম্বার অফ কমার্স এবং ইন্ডাস্ট্রির প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন।
ব্যবসা করতে করতেই রাজনীতিতে আসা। শেহবাজ ১৯৮৮ সালে পঞ্জাবের এক প্রত্যন্ত বিধানসভায় নেতা হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর পার্লামেন্টেও কাজ করেছেন। আর তা ১৯৯০ সালে। এরপর ১৯৯৩ সালে আরও একবার পাঞ্জাব পার্লামেন্ট থেকে নির্বাচিত হন শেহবাজ। এরপর বিরোধী দলনেতা হিসেবে সংসদে কাজ করেন। ১৯৯৭ সালে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন নওয়াজের ভাই।
১৯৯৯ সালে জেনারেল পারফেজ মুশারফের নেতৃত্বে পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থানের পর পাকিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন শেহবাজ শরিফ। ২০০০ সালে সৌদি আরবে নির্বাসনে থাকতে শুরু করেন তিনি। ২০০৭ সালে শেহবাজ আবার পাকিস্তানে ফেরেন। তখনই তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন। ২০০৮ সালে ফের নির্বাচনে জিতে ফের পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি।
এ মুহূর্তে পাকিস্তান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বিরোধী দলনেতার পদে থাকা শেহবাজের এর আগে প্রশাসনিক প্রধানের দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতা আছে। তিনবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন তিনি। এ পদে সবথেকে বেশি দিন থাকার রেকর্ডও তার দখলে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দুর্নীতি সংক্রান্ত দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে লন্ডনে চলে যাওয়ার পরই তার দল পিএলএম-এন পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন শেহবাজ।
এসএ/