কিয়েভ দখলমুক্ত করার দাবি ইউক্রেনের
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার সেনারা কিয়েভের একাংশ এবং আশপাশের অঞ্চলের দখল নিয়েছিল। এবার সেসব এলাকা পুনরায় দখলে নেওয়ার দাবি করছে ইউক্রেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজধানী কিয়েভ ও এর আশপাশের কয়েকটি শহর ও গ্রাম পুনর্দখলে নিতে রুশ বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে আসছিল ইউক্রেনীয় সেনারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে সম্প্রতি কিয়েভ থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, যেভাবেই হোক আক্রমণ বন্ধ হয়েছে এটিই সবচেয়ে ইতিবাচক বিষয়।
এর আগে পোপ ফ্রান্সিসকে কিয়েভ পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লেখেন শহরটির মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো। ভ্যাটিকানের মুখপাত্র মাতেও ব্রুনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ক্লিটসকো গত ৮ মার্চ তার চিঠিতে লেখেন, ‘কিয়েভে পোপের উপস্থিতি শহরে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম, এটা মানুষের জীবন বাঁচানোর চাবিকাঠি হতে পারে। পোপ নিজে না আসতে পারলেও অন্তত ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’
তিনি আরও জানান, পোপ ফ্রান্সিস কিয়েভের মানুষের দুর্দশায় সহমর্মী। যারা এখনো সেখান প্রশাসনিক কাজগুলো করে যাচ্ছেন এবং যাদের পেশা ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে তাদের প্রতি তিনি সমব্যথী।
এদিকে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘এ জন্য কিয়েভ এখনো কোনো মূল্য পরিশোধ করেনি। কিন্তু কিয়েভ সেই মূল্য পরিশোধ করবে।’
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৩৮ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৩৯তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/