রাশিয়ায় ডিক্রি, জার্মানিতে বাড়ল পণ্যের দাম
রাশিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানিসহ ইইউর কঠিন নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে পাইপলাইন বন্ধ করাসহ রুশ মুদ্রা রুবলে তেল-গ্যাস সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ নিয়ে এক ডিক্রি জারি করেন তিনি। শুক্রবার (১ এপ্রিল) থেকেই জার্মানিতে কার্যকর হয়েছে রুবলের বিনিময়ে গ্যাস বিক্রি। এরপর ইউরোপের অন্য দেশের মতো জার্মানিতেও জ্বালানি, ভোজ্যতেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, ময়দা জাতীয় খাবারসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে।
গত কয়েক দিনে চলমান যুদ্ধ ও তেল-গ্যাস সরবরাহকে কেন্দ্র করে সব পণ্যের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৮ শতাংশ। বেশি বিপাকে সাধারণ মানুষ। সামনের দিনগুলো নিয়ে শঙ্কিত তারা। শুধু তেল-গ্যাস, ময়দা কিংবা দুগ্ধ জাতীয় খাবার নয় প্রয়োজনীয় সব পণ্যের দামই এখন বাড়ছে। ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর নীতি-নির্ধারকরা সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিলে বাজারের লাগাম টানা সম্ভব। তা না হলে সংকট আরও গভীর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংকট আরও গভীর হওয়ার আগেই রাশিয়ার তেল-গ্যাসের ওপর থেকে নির্ভরতা কমানোর ওলাফ শলৎজ সরকারের সিদ্ধান্ত যৌক্তিক ও সময়োপযোগী। পুতিনের ডিক্রি জারির পর থেকে সবাই আতঙ্কিত। রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আগেই বিকল্প চিন্তা করতে হবে। বিশেষ করে নতুন করে অন্য কোনো দেশ থেকে তেল-গ্যাস যাতে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির ভিত্তিতে সরবরাহ করা হয় সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। আশা করছি, আসছে শীতের আগেই দ্রব্যমূল্যের বাজার আবার নিয়ন্ত্রণে আসবে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নিত্যপণ্যের দামের এমন ঊর্ধ্বগতিতে আর পড়তে হয়নি। শিল্প কারখানায় উৎপাদন খরচ বাড়ায় সংকট আরও তীব্র হতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৩৭ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৩৮তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/