শান্তি বৈঠকে বড় কোনো অগ্রগতি হয়নি: রাশিয়া
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে মুখোমুখি বৈঠকের পরদিন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন বৈঠকে এমন বড় কোনো অগ্রগতি হয়নি যা নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়।যেটা ইতিবাচক তা হলো ইউক্রেনিয়ানরা অন্তত কাগজে-কলমে তাদের প্রস্তাব তুলে ধরেছে। এতদিনে অন্তত সেটা হাতে পাওয়া গেছে।
বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র পেসকভ বলেন, বাকিটা যা হয়েছে, তাকে আমরা বড় কোনো অগ্রগতি বলতে পারিনা। খুব বেশি আশা করার মত কিছু নেই। রাশিয়ার অংশ এবং রাশিয়ার কোনো ভৌগলিক অঞ্চল নিয়ে কোনো পক্ষের সঙ্গে কোনো ধরণের মীমাংসা আলোচনা রাশিয়ার সংবিধানে নিষিদ্ধ।
তার কথা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখল করা ক্রাইমিয়া বা পূর্ব ইউক্রেনের রুশ সমর্থিত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো নিয়ে ইস্তাম্বুলের বৈঠকে ইউক্রেনের প্রস্তাবে রাশিয়া আদৌ খুশি নয়।
কী প্রস্তাব দিয়েছে ইউক্রেন?
ইস্তাম্বুলে তিন ঘণ্টার বৈঠকে এই প্রথমবারে মত ইউক্রেন লিখিতভাবে তাদের প্রস্তাব বা শর্ত রাশিয়ার কাছে দিয়েছে। প্রধান প্রধান প্রস্তাব:
- -ইউক্রেন একটি ‘নির্জোট এবং পারমানবিক অস্ত্র-মুক্ত’ একটি দেশ হবে যেখানে বিদেশ কোনো সামরিক ঘাঁটি বা সেনাদল থাকবে না।
- এর বদলে ইউক্রেনের নিরাপত্তার ব্যাপারে শক্ত আইনি গ্যারান্টি দিতে হবে। ইউক্রেনের ওপর কোনো হামলা হলে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, চীন, তুরস্ক, ফ্রান্স, ক্যানাডা, ইটালি, পোল্যান্ড এবং ইসরায়েলের মত দেশগুলোকে ইউক্রেনের নিরাপত্তায় এগিয়ে আসতে হবে।
- যে কোনো হামলা শুরুর তিনদিনের মধ্যে এসব দেশকে বৈঠকে বসতে হবে এবং ইউক্রেনের নিরাপত্তায় রক্ষায় অংশ নিতে হবে।
- ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢুকতে দিতে হবে।
- নেটো জোটে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ২০১৯ সালে ইউক্রেনের সংবিধানে যুক্ত করা হয়েছে, ফলে কোনো পরিবর্তনে কয়েক মাস সময় লাগবে।
- আলোচনার মাধ্যমে ক্রাইমিয়ার সার্বভৌমত্ব নির্ধারিত হতে হবে, এবং সেই আলোচনা ১৫ বছর ধরে চলতে পারে। কিয়েভ বলেছে এই সময়ে এই সংকট নিরসনে কোনো সামরিক ব্যবস্থা নেয়া যাবেনা।
- পূর্বে ডনবাস অঞ্চলে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে মুখোমুখি কথা হতে হবে।
- ইউক্রেনের ভূমি থেকে সব রুশ সৈন্যকে চলে যেতে হবে।
বিবিসির পল কারবি বলছেন এ সব প্রস্তাবের অনেক কিছুই প্রেসিডেন্ট পুতিনের যে মনপুত: হবে না তা স্পষ্ট। বিশেষ করে ক্রাইমিয়া এবং ডনবাসের বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো আপোষ-মীমাংসার কথা মস্কো শুনতেই চাইবে না।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আজ বুধবার বলেছেন ক্রাইমিয়া রাশিয়ার অংশ এবং এ নিয়ে অন্য কারো সঙ্গে রাশিয়া কখনই কোনো আলাপ করবে না।
তাছাড়া, যেসব দেশের কাছ থেকে নিরাপত্তা গ্যারান্টি ইউক্রেন চাইছে তাদের বেশিরভাগই নেটো জোটের দেশ। এই প্রস্তাব রাশিয়ার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে সে সম্ভাবনা কম।
সূত্র: বিবিসি