অবন্ধুসুলভ রাষ্ট্রকে পুতিনের হুমকি
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর বিভিন্ন রাষ্ট্রের অবন্ধুসুলভ আচরণের পাল্টা জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অবন্ধু দেশগুলোর ভিসা দেওয়ার উপর কড়াকড়ি আরোপের জন্য প্রেসিডেন্টের একটি খসড়া ডিক্রি প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এতে ওইসব দেশের নাগরিকদের রাশিয়ায় প্রবেশের উপর বেশকিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর দেশটিকে চাপে ফেলতে একের পর অবরোধ আরোপ করে আসছে পশ্চিমা বিশ্ব। পুতিন সরকারকে এক ঘরে করতে নানা কৌশল নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে থেমে নেই রাশিয়াও। ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর যাদের পাশে পায়নি মস্কো তাদের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
অবন্ধু দেশের তালিকায় প্রথমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোকে রাখা হয়। পরে এ তালিকায় অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের পাশাপাশি এশিয়ার জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরকেও যুক্ত করে মস্কো। যোগ করা হয়েছে তাইওয়ানের নামও। যাকে চীন নিজেদের অংশ বলেই মনে করে।
পুতিনসহ রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ব্যক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পশ্চিমা দেশগুলো। আন্তঃব্যাংক লেনদেনের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম সুইফট থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি ভিসা ও মাস্টারকার্ড এবং অ্যাপল পে ও গুগল পে সেবা থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দেশটি।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
৩৪ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ৩৫তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/