সব শেষ করতেই প্লেন নিয়ে পাহাড়ে ধাক্কা চালকের?
দক্ষিণ চীনে সোমবার ভেঙে পড়েছিল চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের প্লেন। মৃত্যু হয় ১৩২জন যাত্রীর। অবশেষে সেই ভেঙে পড়া বিমানের একটি ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার হয়েছে। মূলত এটি ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার্স। আপাতত যতটুকু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, দুর্ঘটনার দিন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল থেকে যে ফোন করা হয়েছিল, তার কোনও উত্তর দেননি পাইলট। অবশ্য যে মডেলের বিমানটি ভেঙে পড়েছিল সেই বিমান চালনার অভিজ্ঞতা ছিল পাইলটের। প্রায় ৬ হাজার ৭০৯ ঘণ্টা তিনি এই ধরনের বিমান আগে চালিয়ে ছিলেন। কো-পাইলটের অভিজ্ঞতা ছিল প্রায় ৫৫৬ ঘণ্টার।
৭৩৭-৮০০ বোয়িং বিমানটি ১৩২ জন আরোহী নিয়ে উড়ে গিয়েছিল এবং সোমবার দক্ষিণ চীনের একটি দুর্গম পাহাড়ী এলাকায় এটি ভেঙে পড়ে। গত এক দশকের মধ্যে এটি ছিল চিনের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। তদন্তকারীরা দুর্ঘটনার কারণ এখনও খতিয়ে দেখছেন। কুনমিং থেকে ফ্লাইট MU5735 প্রায় ২৯ হাজার ফুট উপরে ছিল ভ্রমণ করছিল এবং দক্ষিণ চীনের গুয়াংশিতে তার গন্তব্য থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরে ছিল। এরপরই হঠাৎ সেটি খাড়াভাবে নীচে নেমে যায়। পরবর্তী ১ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের মধ্যে বিমানটি সোজাসুজি নীচে নেমে আসে। এরপরই তা একটি পাহাড়ে আছড়ে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় ৯ জন ক্রু সদস্যসহ বিমানে থাকা ১৩২ জনের মৃত্যু হয়।
বিমান দুর্ঘটনার যে ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল, তাতে দেখা গিয়েছিল যে বিমানটি তীব্র গতিতে সোজাসুজি নিচে নেমে আসছিল। বিমানের পরিভাষায় এটিকে ‘নোজডাইভ’ বলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তিগত কারণের জন্য বিমান এই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারে। কারণ স্বাভাবিকভাবে বিমান যখন জরুরি ভিত্তিতে অবতরণ করে, তখন বিমান সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫০০ ফুট প্রতি মিনিটে নেমে আসতে পারে। অবতরণের গতি এর বেশি হলে যাত্রীদের অসুবিধায় পড়তে হয়। কিন্তু চিনের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি প্রতি মিনিটে প্রায় ১০ হাজার ফুট নীচে নেমে এসেছিল। ফলে ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ হয় বিমানটিতে।
বিমানের ব্ল্যাক বক্স পাওয়া গিয়েছে অবশেষে। প্রসঙ্গত, চীনে প্রায় ৩০ বছর পর এই ধরনের ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটল। এই দুর্ঘটনার পর দেশজুড়ে জাতীয় শোকও ঘোষণা করা হয়েছিল। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের কথা ঘোষণা করেছেন। এতটা অভিজ্ঞতা থাকা সত্বেও বিমানের চালক কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হারালেন, সেটাই এখন প্রশ্ন। সেক্ষেত্রে চালকের অসুস্থতা আর আত্মহননের তত্ত্বও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।