পুতিন-মাক্রোঁর এক ঘণ্টা বৈঠক
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে মঙ্গলবার ফের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠক হয়েছে বলে মাক্রোঁর অফিস জানিয়েছে। প্রায় এক ঘণ্টার টেলিফোন বৈঠকে কী কী আলোচনা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে ইউক্রেন সংকট যে গোটা ইউরোপে নিরাপত্তার অভাব তৈরি করেছে, মাক্রোঁ তা পুটিনকে জানিয়েছেন বলে জানা গেছে। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও ফ্রান্স দাবি করেছে। যদিও পুটিন এখনো যুদ্ধবিরতিতে সম্পূর্ণ রাজি হননি বলেই জানানো হয়েছে।
যুদ্ধ চলছে। এ অবস্থায় প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে বসে থাকেন কী করে? জেলেনস্কি দেশের জনগণকে উজ্জীবিত করতে বার্তা দিচ্ছেন, যুদ্ধ বন্ধে কিংবা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি, হাসপাতালে ছুটে যাচ্ছেন যুদ্ধাহতদের দেখতে৷ওপরের ছবিতে কিয়েভের সামরিক হাসপাতালে আহত এক সৈনিকের পাশে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
এদিনের বৈঠক নিয়ে রাশিয়ার তরফে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে ফ্রান্স জানিয়েছে, বৈঠক একেবারে ভেস্তে যায়নি। আগামীতে ফের আলোচনার রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে। মাক্রোঁ জানিয়েছেন, তিনি তার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও মাক্রোঁ কথা বলেছেন বলে তার অফিস জানিয়েছে।
সার্বিয়ার বক্তব্য
ইউক্রেনে রাশিয়ার যে অভিযান চলছে, সার্বিয়া তা সমর্থন করে না। কিন্তু তাই বলে রাশিয়ার উপর যেভাবে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে, সার্বিয়া তা-ও সমর্থনযোগ্য বলে মনে করে না বলে জানিয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ভুলিন। পশ্চিম যেভাবে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে এবং চাপাচ্ছে, তা তিনি ‘রাশিয়া-বিরোধী হিস্টিরিয়া’ বলে মনে করেন। এদিন স্পষ্ট করেই সার্বিয়া জানিয়ে দিয়েছে, তারা রাশিয়ার শক্তিশালী সঙ্গী। এই পরিস্থিতিতেও তারা রাশিয়ার সঙ্গ ছাড়বে না। সার্বিয়াও দীর্ঘদিন ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে চায়। কিন্তু তার জন্য তারা রাশিয়ার সঙ্গ ছাড়বে না বলে এদিন দেশের মন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। বেলারুশ ছাড়া এই প্রথম ইউরোপের কোনো দেশ এত স্পষ্ট করে রাশিয়ার পাশে থাকার কথা জানালো।
সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নিয়েছিল ফুটফুটে এই শিশুটি৷ ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে একটু দূরের এক আবাসনের বেসমেন্টের বিশেষ আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে সে৷ অবাক চোখে পৃথিবী দেখার এই তো সবে শুরু।
সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নিয়েছিল ফুটফুটে এই শিশুটি। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে একটু দূরের এক আবাসনের বেসমেন্টের বিশেষ আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে সে। অবাক চোখে পৃথিবী দেখার এই তো সবে শুরু।
বেলারুশের রাষ্ট্রপ্রধান লুকাশেঙ্কো রাশিয়াকে সবরকম সাহায্য করছেন। ইউক্রেন আক্রমণের জন্য তারা রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে নিজেদের সীমান্ত খুলে দিয়েছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে বেলারুশে সরকারবিরোধী গোষ্ঠী আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। দেশ ছেড়ে পালানো বেলারুশের অন্যতম বিরোধী নেত্রী স্বেতলানা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ‘ইউক্রেন জয় না পেলে বেলারুশও বর্তমান শাসকের হাত থেকে নিস্তার পাবে না।’ বেলারুশের বিরোধী শিবির ইউক্রেনের পক্ষে আছে বলে এদিন জানিয়েছেন স্বেতলানা। রাশিয়া যদি ইউক্রেনে জিতে যায়, তাহলে লুকাশেঙ্কো নিজেকে আরো ক্ষমতাবান বলে মনে করবেন। এ কারণেই তারা ইউক্রেনকে সমর্থন করছেন বলে এদিন স্পষ্ট জানিয়েছেন বেলারুশের বিরোধী নেত্রী। তার বক্তব্য, বেলারুশের ভিতরে বহু মানুষ এই যুদ্ধের সমর্থক নন। কিন্তু প্রশাসনের অত্যাচারের ভয়ে তারা চুপ করে আছেন। স্বেতলানার আশা, রাশিয়া এই লড়াই পরাস্ত হলে বেলারুশে আটকে থাকা রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির রাস্তা খানিকটা সহজ হবে। আর উল্টোটা ঘটলে তাদের আরো বহু বছর জেলে পচে মরতে হবে।
রাশিয়ায় সাংবাদিকদের অবস্থা
মারিউপল নিয়ে একটি রিপোর্ট করার জন্য সাংবাদিক আলেকজান্ডার নেভজোরোভের বিরুদ্ধে ফৌজদারি শুরু করেছে রাশিয়ার প্রশাসন। আলেকজান্ডার একটি রিপোর্টে লিখেছিলেন, রাশিয়ার সেনা ইচ্ছাকৃতভাবে মারিউপলে একটি হাসপাতালে বোমাবর্ষণ করেছিল। তদন্তকারীদের বক্তব্য, ইচ্ছাকৃতভাবে আলেকজান্ডার এই 'ভুল' তথ্য পরিবেশন করেছিলেন। দেশের সম্মান নষ্ট করতেই এ কাজ তিনি করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তিনি রাশিয়ার এই অভিযানকে 'যুদ্ধ' বলে বর্ণনা করেছেন। রাশিয়া সরকারিভাবে একে যুদ্ধ বলছে না। এবং সে কারণে সাংবাদিকরাও একে যুদ্ধ বলতে পারবনে না বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।