যুদ্ধের জন্য ন্যাটোকে দায়ী করলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের জন্য পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে দায়ী করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করার জন্য রাশিয়ার নিন্দা করার আহ্বানে সাড়া দেবেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দক্ষিণ আফ্রিকার পার্লামেন্টে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে প্রেসিডেন্ট রামাফোসা বলেন, ‘রাশিয়া সীমান্তের কাছে ন্যাটো জোট সম্প্রসারণের চেষ্টা হলে সেখানে ছোট নয় বরং বর ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে–ন্যাটো তাদের নেতা ও কর্মীদের এমন সতর্কবার্তা আমলে নিলে ইউক্রেনে এই যুদ্ধ এড়ানো যেত।’
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা আমাদের চাপ দিয়ে বলছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের বৈরী অবস্থান নেওয়া উচিত। তবে এর পরিবর্তে আমরা বরং এমন অবস্থান নিতে চলেছি যাতে সংলাপ হওয়া উচিত। চিৎকার বা গলাবাজি করে এই সংঘাতের অবসান ঘটবে না।’
তবে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘বলপ্রয়োগ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনকে প্রশ্রয় দিতে পারে না দক্ষিণ আফ্রিকা।’
রামাফোসা আরও জানান, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও তার কথা হয়েছে। পুতিন তাকে ব্যক্তিগতভাবে আশ্বস্ত করেছেন, আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে। জেলেনস্কির সঙ্গেও তিনি কথা বলতে চান।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৪ সালে শ্বেতাঙ্গ শাসনের অবসানের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতায় আসে আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস। তখন থেকে দলটি দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্ষমতাসীন। সিরিল রামাফোসার দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সঙ্গে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নেরও বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
২৩ দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ২৪তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/