ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিতে হামলায় ১৮০ সেনা নিহত, দাবি রাশিয়ার
ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভের বাইরে পোল্যান্ড সীমান্তের কাছে একটি সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে রাশিয়া। হামালায় ৩৫ জন নিহত ১৩৪ জন আহত হয়েছেন বলে রাশিয়া জানিয়েছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়ার দাবি হামলায় ১৮০ জন বিদেশি ভাড়াটে যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় রবিবার সকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগের দিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে হামলার হুমকি দিয়েছিল রাশিয়া। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রুশ বিমান থেকে সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে ন্যাটোর কোনো সদস্যদেশের সেনা আছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটারের মতো দূরে ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলের ইয়াভোরিভ শহরে এ সামরিক ঘাঁটি অবস্থিত। পোল্যান্ড ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ইউক্রেনকে দেওয়া অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পোল্যান্ড সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে।
হামলার পর ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকোভ এক টুইটে বলেন, 'ইইউ-ন্যাটো সীমান্তের কাছে শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর এটা নতুন সন্ত্রাসী হামলা।'
এ হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। হামলার ঘটনাকে চলমান সংঘাতের উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হিসেবে বর্ণনা করেছে যুক্তরাজ্য। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান পশ্চিমা সামরিক জোটের কোনো সদস্যদেশের সীমানায় এলে ন্যাটো তার সীমান্তের প্রতিটি ইঞ্চি রক্ষা করবে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে 'শান্তি রক্ষায়' সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে 'প্রজাতন্ত্র' দুটিতে রুশ সেনাদের 'শান্তিরক্ষী' হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
আঠারো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ১৯তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
কেএফ/