ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটিতে রুশ হামলায় নিহত ৩৫
পোল্যান্ড সীমান্তের কাছে ইউক্রেনের একটি সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে রাশিয়ার বিমান হামলায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৩৫ জন। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১৩৪ জন।
ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভের বাইরে এই সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি অবস্থিত। লভিভ থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রটিতে হামলার ঘটনায় লভিভ শহরের আঞ্চলিক গভর্নর মাকসিম কোজিতস্কি হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সামরিক ঘাঁটিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ। কোজিতস্কি জানান, ইয়াভোরিভ সামরিক স্থাপণায় ৩০টির বেশি রকেট দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। হামলার পর বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে দেখা গেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ১৩শ ইউক্রেনীয় সেনা মারা গেছে। কিয়েভে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রুশ সৈন্যদের প্রাণহানি হয়েছে এর চেয়ে দশ গুণ বেশি। তিনি বলেন, শত শত রুশ সৈন্য আত্মসমর্পণ করেছে। যদিও তার দাবি কতটা সত্য তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
সতের দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ১৮তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
কেএফ/