ইউক্রেনের সেনা ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিল রাশিয়া
পোল্যান্ড সীমান্তের কাছে ইউক্রেনের একটি সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। আজ রবিবার ইউক্রেনের স্থানীয় এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লভিভের বাইরে এই সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি অবস্থিত। লভিভ থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের সামরিক প্রশিক্ষণকেন্দ্রটিতে হামলা হওয়ার কথা জানিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়েছেন আঞ্চলিক প্রশাসনের প্রধান ম্যাক্সিম কোজিটস্কি।
ম্যাক্সিম তার পোস্টে বলেন, 'রাশিয়া আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা ও নিরাপত্তা কেন্দ্রে বিমান হামলা চালিয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার বাহিনী এখন পর্যন্ত কেন্দ্রটিতে আটটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
তবে হামলায় হতাহতের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য পোল্যান্ডের সীমান্ত থেকে ইউক্রেনের মাত্র ছয় মাইল দূরে ইয়াভোরিভ জেলায় সামরিক ঘাঁটিটি অবস্থিত।
প্রায় সাত লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত শহর লভিভ। রুশ আগ্রাসন শুরুর পর এই শহর থেকে অনেক মানুষ পালিয়ে পোল্যান্ডে গেছেন। তাছাড়া রুশ হামলার মুখে ইউক্রেন ত্যাগকারী লোকজনের জন্য লভিভ শহরটি একটি ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
সতের দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ১৮তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
কেএফ/