রাশিয়ার জ্বালানি নিষিদ্ধ করলেন বাইডেন
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে দেশটির উপর সর্বাত্মক জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তিকে লক্ষ্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের জ্বালানি আমদানির উপর এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউএসএ টুডে এ খবর জানায়।
বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরগুলোতে আর রাশিয়ার তেল গ্রহণ করা হবে না। আমরা পুতিনের যুদ্ধে ভর্তুকি দেওয়ার অংশীদার হবো না।’
বাইডেন জানান যে, তিনি ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে পরামর্শ করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে তিনি এটাও জানান যে, ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দেওয়ার মতো অবস্থানে নেই। বাইডেন আরও জানান, রাশিয়ার জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে ‘দীর্ঘমেয়াদী কৌশল’ তৈরি করতে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই রাশিয়ার উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। রাশিয়ার অর্থনৈতিক শক্তি ভেঙে দিতে দেশটির কাছ থেকে জ্বালানি তেল না নেওয়ার পরিকল্পনার কথা আগেই জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
তের দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১৪তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/