চীন-রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধের পরিকল্পনা ট্রাম্পের
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান বন্ধে পশ্চিমা বিশ্ব যখন নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটছে, তখন এক বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এফ-২২ বিমানে চীনের পতাকা লাগিয়ে রাশিয়ার ওপর বোমা বর্ষণ করা। এর ফলে চীন-রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে যাবে। আর এতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমারা লাভবান হবে।
রবিবার (৬ মার্চ) নিউ অর্লিন্স অঙ্গরাজ্যে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘এফ-২২ বিমানে চীনা পতাকা লাগিয়ে ইউক্রেনে অভিযান পরিচালনাকারী রাশিয়ার সেনাদের ওপর বোমা বর্ষণ করে তার জন্য বেইজিংকে দোষী করা উচিত। এতে রাশিয়া ও চীন যুদ্ধে জড়িয়ে যাবে। তখন আমরা বলতে পারব চীন এই হামলা চালিয়েছে।’
এরপর তারা দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে যাবে এবং আমরা বসে বসে তা দেখব। ট্রাম্পের এই কথাতেই হলভর্তি লোকজন সবাই হেসে ফেলেন।
সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প হয়তো তার এসব কথা কৌতুক করে বলেননি। কারণ ক্ষমতায় থাকাকালে তিনি ডেনমার্কের বিশাল ভূখণ্ড গ্রিনল্যান্ড কিনে ফেলতে চেয়েছিলেন। তাতে ডেনমার্ক রাজি না হওয়ায় দেশটিতে নির্ধারিত সফর বাতিল করেন ট্রাম্প।
ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করার পর তাকে ‘স্মার্ট ও জিনিয়াস’ আখ্যা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। অপরদিকে বাইডেনকে ‘নির্বোধ’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
বারো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১৩তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/