শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি!

ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের ২৯ নভেম্বর বিকেলের দিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের কয়েকটি ফিলিস্তিনি বাচ্চা ছেলে তাদের সামনের রাস্তায় খেলতে নেমে এসেছিল। ওখানে তারা প্রায়ই একসঙ্গে খেলত। কয়েক মিনিট পরেই ওই বাচ্চাদের মধ্যে দুজন ইসরায়েলি সেনাদের ছোঁড়া গুলিতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। নিহত ওই দুজন ছিল ১৫ বছর বয়সী বাসিল ও ৮ বছরের অ্যাডাম।

জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর বা ‘ওয়েস্ট ব্যাংক’ সামরিক দখলদারির অধীনে আছে বিগত অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে। সেখানে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী কী ধরনের আচরণ করে থাকে, তা নিয়ে বিবিসির করা একটি তদন্তের অংশ হিসেবে যে দিন ওই বাচ্চাদুটি মারা যায়, সে দিন ঠিক কী কী ঘটেছিল তার ঘটনাক্রমগুলো জোড়া দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

ওই ঘটনাটি সংক্রান্ত যাবতীয় মোবাইল ফোন ও সিসিটিভি ফুটেজ, ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর গতিবিধি নিয়ে তথ্য, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য ও ঘটনাস্থলের মাপজোখ-সহ বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ – এগুলো সব একত্রিত করে যে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে তাতে ওই ঘটনায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল বলেই প্রতীয়মান হয়।

বিবিসি যে সব সাক্ষ্যপ্রমাণ পেয়েছে, তা দেখে জাতিসংঘের মানবাধিকার ও কাউন্টার-টেররিজম বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি বেন সল পর্যন্ত বলেছেন, অ্যাডাম নামে বাচ্চাটির মৃত্যু ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলেই মনে হচ্ছে।

আরেকজন আইন বিশেষজ্ঞ ড. লরেন্স হিল-কওথর্ন বলেছেন, যেভাবে প্রাণঘাতী শক্তির প্রয়োগ করা হয়েছে তা ছিল ‘নির্বিচার’।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স বা আইডিএফ জানিয়েছে কোন পরিস্থিতিতে এই মৃত্যুগুলো ঘটেছে তা ‘পর্যালোচনা করা হচ্ছে’। তবে সেই সঙ্গেই তারা বলেছে, ‘লাইভ ফায়ার (আগ্নেয়াস্ত্র) তখনই ব্যবহার করা হয় যখন কোনও আশু বিপদের মোকাবিলা করতে হয়। এছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করার সময় অ্যারেস্ট প্রোটোকল অনুযায়ী বাকি সব উপায় বন্ধ হয়ে গেলে তখনও করা হয়।’

গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের চালানো হামলার পর থেকে পশ্চিম তীরেও সহিংসতা তীব্র আকার নিয়েছে। সেখানে ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে গ্রাফিতি এঁকে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে, বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের অস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে আর ওই এলাকা ছেড়ে প্রতিবেশী জর্ডানে চলে যেতে বলা হচ্ছে এবং ফিলিস্তিনি একজন বন্দুকধারীর দেহ খুঁচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয়েছে – বিবিসি এগুলোরও প্রমাণ পেয়েছে।

২৯ নভেম্বরের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বাসিল দাঁড়িয়ে ছিল একটি হার্ডওয়ার দোকানের সামনে, যেটির শাটার নামানো ও তালা বন্ধ করা ছিল। পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে যখনই ইসরায়েলি সেনা আসে, আশেপাশের দোকানগুলো হুড়মুড় করে বন্ধ হয়ে যায়। পশ্চিম তীর কিন্তু গাজার মতো হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকা নয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কাছেই জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর চালানো অভিযান থেকে আসা গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল।

লিওনেল মেসির বিরাট ভক্ত আর ফুটবল-পাগল অ্যাডাম দাঁড়িয়ে ছিল তার বড় ভাই বাহার সঙ্গে, যার বয়স ১৪। সে দিন রাস্তায় মোট ৯ জনের মতো ছেলে ছিল, যাদের সবাইকে সিসিটিভি ক্যামরার ফুটেজে দেখা গেছে। এরপর যা ঘটেছিল, ওই ক্যামেরাতে তার প্রায় ৩৬০-ডিগ্রি ভিউও ধরা পড়েছে।

কয়েকশো মিটার দূরে তখন গোটাছয়েক সশস্ত্র ইসরায়েলি সামরিক যানের একটি বহর ছিল। হঠাৎই অভিমুখ পাল্টে ওই সেনা বহরটি বাচ্চাগুলোর দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। ওই বাচ্চারা স্পষ্টতই অস্বস্তিতে ভুগতে শুরু করে, কয়েকজন দূরেও সরে যেতে থাকে।

ঠিক এই মুহূর্তে তোলা মোবাইল ফোনের ফুটেজে পরে দেখা গেছে, একটি সশস্ত্র সেনা যানের সামনের দরজাটি খুলে যায়। ভেতরে যে সেনা সদস্য ছিল তার একেবারে চোখের সামনে চলে আসে বাচ্চাগুলো। বাসিল তখন রাস্তার একেবারে মাঝখানে, আর অ্যাডাম ওই সৈন্যদের থেকে মাত্র ১২ মিটার দূরে – দৌড়ে পালাচ্ছে। এরপর কম করে হলেও পর পর ১১টা গুলির শব্দ পাওয়া যায়।

পরে ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে বিবিসি দেখতে পেয়েছে ওই বুলেটগুলো অনেকটা এলাকা জুড়ে আঘাত করে। চারটি বুলেট আঘাত করে একটি ধাতব পোলে, দুটি বুলেট হার্ডওয়ার স্টোরের শাটারে লাগে, পার্ক করা একটি গাড়ির বাম্পার ফুঁড়ে চলে যায় একটি বুলেট – এবং আরও একটি ছেদ করে দেয় একটি হ্যান্ডরেইল।

বিবিসির হাতে পরে যে মেডিক্যাল রিপোর্ট এসেছে তাতে দেখা গেছে দুটি গুলি সোজা একদম বাসিলের বুক ভেদ করে দেয়।

আর একটি গুলি আট বছর বয়সী অ্যাডামের মাথার পেছন দিকে এসে লাগে, কারণ সে দৌড়ে পালাচ্ছিল। তার বড় ভাই বাহা মরিয়া হয়ে তাকে টেনে আড়াল করার চেষ্টা করেছিল ... রাস্তায় রক্তের ধারা বয়ে যায়, বাহা চিৎকার করে একটা অ্যাম্বুলেন্স ডাকার চেষ্টা করে যায়।

কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। বাহা পরে বলেছে, অ্যাডাম আর তার বন্ধু বাসিল তার চোখের সামনে মারা যায়।

আমি একদম হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিলাম। নিজের কথা তখন আমার মনেই নেই, আমি শুধু ওর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ‘অ্যাডাম, অ্যাডাম’ বলে কত ডাকলাম – কিন্তু ওর প্রাণ ততক্ষণে শরীর ছেড়ে চলে গেছে, ও আর সাড়াই দিল না!, চোখের জলে ভাসতে ভাসতে বাহা পরে বিবিসিকে বলেছে।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঠিক আগে বাসিলের ছবিতে দেখা গেছে সে কিছু একটা হাতে ধরে ছিল। জিনিসটা ঠিক কী তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। আইডিএফ পরে ঘটনাস্থলে নেওয়া একটি ছবি শেয়ার করেছে, এবং তারা বলেছে ওই জিনিসটি ছিল বিস্ফোরক-ভরা বা এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস।

ঘটনাস্থল পরীক্ষা করে আমরা যে সব সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছি তা বেশ কয়েকজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞকে দেখানো হয়েছে, যাদের মধ্যে মানবাধিকার আইনজীবীরা, যুদ্ধাপরাধের তদন্তকারী ও একজন কাউন্টার-টেররিজম বিশেষজ্ঞও ছিলেন।

এছাড়া জাতিসংঘ-সহ বিভিন্ন নিরপেক্ষ সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তা শেয়ার করা হয়েছে। অনেকে তাদের মতামত দিয়েছেন নিজের নাম প্রকাশ না-করার শর্তে। এই বিশেষজ্ঞরা একমত হয়েছেন যে এই ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত। কয়েকজন আবার আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছেন, দেখে মনে হচ্ছে এখানে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ঘটেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার ও কাউন্টার-টেররিজম বিষয়ক স্পেশাল র‍্যাপোর্টিয়র বেন সল বলেছেন, বাসিল যদি কোনও এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস হাতে ধরে থাকে, তাহলে তার ক্ষেত্রে আইনসম্মতভাবে প্রাণঘাতী শক্তির প্রয়োগ করা হয়েছে কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।

‘অ্যাডামের ক্ষেত্রে এটাকে আন্তর্জাতিক মানবিকতা আইনের লঙ্ঘন বলেই মনে হচ্ছে, কারণ ইচ্ছাকৃতভাবে, নির্বিচারে ও অসঙ্গতিপূর্ণভাবে বেসামরিক মানুষের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে – যেটা একটা যুদ্ধপরাধ এবং মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারের লঙ্ঘন’, বলেছেন সল।

ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টলে সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ল-র কো-ডিরেক্টর ড: লরেন্স হিল-কওথর্ন বলছেন, ‘ওই সৈন্যরা ছিল সশস্ত্র সামরিক যানে। যদি তাদের সামনে কোনও হুমকি থেকেও থাকে, তাদের উচিত ছিল সে দিকে ধাওয়া করে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা। তার বদলে আপাতদৃষ্টিতে নির্বিচারে যদি প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ হয় সেটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।’

আইডিএফ বলেছে, ওই সন্দেহভাজনরা তাদের সৈন্যদের লক্ষ্য করে বিস্ফোরক ছুঁড়তে যাচ্ছিল – যাতে তারা তক্ষুণি প্রবল বিপদের মুখে পড়ত। ‘আমাদের সৈন্যরা গুলিবর্ষণ করে তার জবাব দেয় এবং তাদের সেই ‘হিট’গুলো চিহ্নিত করা হয়েছে’, বলেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।

কিন্তু আমরা বিবিসির পক্ষ থেকে পরে যে ভিডিও প্রমাণ খুঁটিয়ে দেখেছি এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য পেয়েছি, তা থেকে দেখা যাচ্ছে অ্যাডাম মোটেও সশস্ত্র ছিল না এবং সে যখন দৌড়ে পালাচ্ছিল, তখন তার মাথার পেছন দিকে গুলি করা হয়।

আইডিএফ বলেছে, কী পরিস্থিতিতে অ্যাডাম ও বাসিলের মৃত্যু হয়েছে তা ‘পর্যালোচনা করা হচ্ছে’। আইডিএফের কর্মকান্ডের ফলে পশ্চিম তীরে যদি কোনও শিশুর মৃত্যু হয় তাহলে সেরকম প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা রুটিনের মতো এই কাজটি করে থাকে।

তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অনেক সাবেক সদস্য – যারা বিবিসির সংগ্রহ করা ওইসব সাক্ষ্যপ্রমাণ দেখেছেন – তারা জানাচ্ছেন ইসরায়েলের আইনি ব্যবস্থা ওই সৈন্যদেরই রক্ষা করবে বলে তাদের বিশ্বাস, সে তাদের প্রাণঘাতী শক্তির প্রয়োগ সমীচিন হোক বা না হোক!

একজন সাবেক সার্জেন্ট, যিনি ২০১৮-২০২০ সালের মধ্যে পশ্চিম তীরে মোতায়েন ছিলেন, তিনি বলেন, ‘একজন ইসরায়েলি সেনা যদি একজন ফিলিস্তিনিকে জিরো রেঞ্জে গুলি করে মারেন, তবেই কেবল ইসরায়েলে সেটা ‘হত্যা’ বলে গণ্য হবে। যে ধরনের ঘটনায় অ্যাডামের মৃত্যু হয়েছে সেরকম ঘটনায় একজন সৈন্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্তের সম্ভাবনা কার্যত শূন্য শতাংশ!’

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন 'ইয়েশ দিনে'র তথ্য থেকেও দেখা যায়, ইসরায়েলের সৈন্যদের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ ওঠে সেগুলোর ১ শতাংশেরও কম ক্ষেত্রে বিচার হয়!

গত ৭ অক্টোবর হামাসের যে হামলায় প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হয়েছিলেন ও ২৫৩জনকে জিম্মি করা হয়েছিল, সেই ঘটনার ফুটেজ ইসরায়েলের মানুষকে ক্রুদ্ধ করে তুলেছিল, স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল সারা বিশ্বও। সেই তখন থেকেই বিশ্বের মনোযোগ গাজার যুদ্ধ ও সেখানকার মানবিক সঙ্কটের দিকেই কেন্দ্রীভূত। গাজা ভূখন্ডে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী সেখানে এ পর্যন্ত ৩৪,০০০ লোক নিহত হয়েছেন।

এর পাশাপাশি ওই একই সময়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে সেখানকার শিশুদের জন্য গত বছরটি সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর হিসেবে প্রতিপন্ন হয়েছে।

ইউনিসেফের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে সেখানে মোট ১২৪জন শিশু নিহত হয়েছে – যার মধ্যে ৮৫জনই মারা গেছে ৭ অক্টোবরের পর। আর ২০২৪ সালে ওই অঞ্চলে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী বা সেনাবাহিনীর হাতে মোট ৩৬জন ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে।

পশ্চিম তীরকে যেহেতু ‘ওয়ার জোন’ বা যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে গণ্য করা হয় না, তাই আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সেখানে বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি সংযম দেখানোর কথা।

আইডিএফের ‘রুলস অব এনগেজমেন্ট’টা আসলে ঠিক কী, সেটা তারা কখনও প্রকাশ করে না। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাবেক ও কর্মরত সদস্যরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, প্রাণঘাতী শক্তির ব্যবহারকে একটা ‘শেষ রাস্তা’ হিসেবেই দেখার কথা – যখন সৈন্যদের জীবনের ওপর সত্যিকারের ও আশু বিপদ থাকে। এক্ষেত্রে ‘অ্যাপ্রোচ’টা হওয়া উচিত পর্যায়ক্রমিক, বা ধাপে ধাপে।

তারা বলছেন, এটা শুরু হয় প্রথমে আরবি ও হিব্রু ভাষায় মৌখিকভাবে সতর্ক করার মধ্যে দিয়ে। তাতে না-হলে কাঁদানে গ্যাসের মতো প্রাণঘাতী নয়, এমন হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়। তারপর পায়ে গুলি করা হয়, আর হত্যার জন্য গুলি চালানোটা একেবারে শেষ ধাপ।

পশ্চিম তীরে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে ইসরায়েলের গুলিতে মারা গেছে, ২ থেকে ১৭ বছর বয়সী এমন মোট ১১২টি বাচ্চার মেডিক্যাল রিপোর্ট প্যালেস্টিয়ান অথরিটি পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুবাদে বিবিসি দেখতে পেয়েছে। এই সব গুলিচালনার ঘটনাগুলো ঠিক কী পরিস্থিতিতে ঘটেছে, তার সব আমরা জানতে না-পারলেও এটা খুবই সম্ভব যে কয়েকটি ক্ষেত্রে ইসরায়েলি সৈন্যদের জীবনের ওপর সত্যিকারের হুমকি ছিল।

তবে আমাদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এগুলোর মধ্যে ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রেই আঘাত ছিল তাদের শরীরের ওপরের অংশে, যেখানে গুলি লাগলে না বাঁচার সম্ভাবনাই বেশি। এর অর্থ হল, এই ধরনের বেশির ভাগ ঘটনায় গুলিতে আহত করার বদলে প্রাণ কেড়ে নেওয়াই ছিল সৈন্যদের উদ্দেশ্য।

ফলে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সৈন্যরা তাদের ‘রুলস অব এনগেজমেন্ট’ আদৌ অনুসরণ করছেন কি না এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী ধরনের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তা নিয়ে যথারীতি প্রশ্ন উঠছে।

পশ্চিম তীরে এই সামরিক অভিযানগুলোর কী প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে পাঁচ সপ্তাহ সময়কাল ধরে খতিয়ে দেখার পর আমরা এমন বহু ঘটনার প্রমাণ পেয়েছি, যা সেনাবাহিনীর আচরণ নিয়ে খুব গুরুতর প্রশ্ন তুলে দেয়।

২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে তুলকার্ম শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের একটি ৪৫-ঘণ্টা ব্যাপী সামরিক অভিযানও বিবিসি প্রত্যক্ষ করেছে, যেখানে তারা একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে আক্রমণের নিশানা করেছিল। স্থানীয়ভাবে ওই গোষ্ঠীটি ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স’ নামে পরিচিত।

ওই অভিযানের পর বহু ফিলিস্তিনি আমাদের বলেছেন, সৈন্যরা বন্দুকের নলের সামনে ধরে তাদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী জর্ডানে চলে যেতে বলেছে। আইডিএফ জানিয়েছে যে বেসামরিক লোকজনকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, এরকম কোনও অভিযোগ এলে তারা খতিয়ে দেখবে।

হেথাম নামে ১২ বছর বয়সী একটি কানাডিয়ান-ফিলিস্তিনি বাচ্চা ছেলে জানিয়েছে যে তাকে একজন ইসরায়েলি সৈন্য গলায় ছুরি ধরে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। হেথামের বাবা ও ভাইও তার এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন।

ওই ক্যাম্পে একটি পরিবারের বাসায় আমরা দেখেছি আল-আকসা মসজিদের একটি ম্যুরালকে ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে – যেটি ইসরায়েলি সৈন্যদেরই কাজ বলে তারা বলছেন। আল-আকসা মসজিদকে ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম তীর্থস্থান বলে গণ্য করা হয়।

পাশের একটি দেওয়ালে স্প্রে-পেইন্ট করে আঁকা ছিল ‘স্টার অব ডেভিডে’র চিহ্ন। আরেকটিতে হিব্রু ভাষায় লেখা ছিল ‘৭ অক্টোবর’ – স্পষ্টতই হামাসের হামলার প্রসঙ্গ টেনে আনতে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, যে এই ধরনের ভ্যান্ডালিজম ‘আইডিএফ মূল্যবোধের পরিপন্থী’ এবং তারা তাদের সৈন্যদের কাছ থেকে এরকম আচরণ প্রত্যাশা করে না।

১২ বছর বয়সী হেথাম বলছিল, সৈন্যরা তাদের বাড়িতে ‘সব কিছু’ ভেঙে খানখান করে দিয়েছে এবং ওই সৈন্যদেরই একজন তার গলায় ছুরি ধরে হুমকি দিয়েছে। তাদের বাড়ির দোতলায় সব ছত্রখান করা হয়েছে, কিচেন ক্যাবিনেটগুলো ভেঙে চুরমার করা হয়েছে, বাচ্চাদের খেলনাগুলো ছুঁড়ে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে, টেলিভিশন সেটটাও আস্ত নেই। গোটা ক্যাম্প জুড়ে একটার পর একটা বাড়িতে হুবুহু এই একই দৃশ্য।

জেরুজালেমে ডায়াকোনিয়া ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিটারিয়ান ল সেন্টারের সিনিয়র আইন বিশেষজ্ঞ ড. এইটান ডায়মন্ড বলছেন, ‘এই ধরনের ভ্যান্ডালিজম, যেমন দেওয়ালে স্প্রে করে স্টার অব ডেভিড বা ‘৭ অক্টোবর’ আঁকা – এগুলো পরিষ্কার বেআইনি।’

তুলকার্ম ক্যাম্পে একটি শিশুর সামনে ছুরি ধরে, কিংবা আরও অনেককে বন্দুকের নলের সামনে যেভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে – সেটাও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আইডিএফের ওই একই অভিযানে সৈন্যরা একজন সন্দেহভাজন ফিলিস্তিানি যোদ্ধাকেও গুলি করে মারে, যে হয়তো নিজের শরীরে বিস্ফোরক বহন করছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাদের বলেছেন, এরপর তার শরীরে মূত্রত্যাগ করা হয়, বারবার আঘাত করা হয় এবং শেষে বেঁধে ফেলে রাস্তা দিয়ে দেহটা টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিবিসিকে একটি বেঁধে ফেলা লাশের ছবিও দেখানো হয়েছিল। রক্তের দাগ লেগে থাকা ছবির ওই জায়গাটি ভাল করে খুঁটিয়ে দেখে আমরা দেখতে পাই কাপড়ের টুকরো আর তার তখনও সেখানেই পড়ে আছে। ছবিতে যে ধরনের জিনিস দিয়ে লাশটিকে বাঁধা হয়েছে, পড়ে থাকা জিনিসগুলোও তার সঙ্গে মিলে যায়।

আমাদের এই সব সাক্ষ্যপ্রমাণও স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের কাছে পেশ করা হয়। ইউনিভার্সিটি অব জেনেভা-তে আন্তর্জাতিক আইনের একজন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মার্কো সাসোলি বলেন, যদি ধরেও নিই একজনকে আইনসম্মতভাবেই হত্যা করা হয়েছে, তার পরেও নিহতের মরদেহকে অবশ্যই মর্যাদা দিতে হবে। আপনারা যা বলছেন সেটা আন্তর্জাতিক মানবিকতা আইনের লঙ্ঘন, এমন কী তা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়েও পড়তে পারে।

আইডিএফ বলেছে, ওই নিহত যোদ্ধার দেহ পরীক্ষা করে তাতে বিস্ফোরক পাওয়া যায় এবং রেড ক্রেসেন্টের কর্মীরাও ওই দেহটি ছুঁতে অস্বীকার করে। ‘এই কারণেই আইডিএফ সেনারা নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং তার শরীরের নিচে আরও কোনও অস্ত্রশস্ত্র রাখা আছে কি না তা দেখতে তার হাত ও পা-দুটো বেঁধে ফেলতে বাধ্য হয়’, জানিয়েছে তারা।

যে সাবেক ইসরায়েলি সেনারা বিবিসির এই সব সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করেছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন বলেছেন, তারা এটা ভেবে আতঙ্কিত যে পশ্চিম তীরে আইডিএফ অভিযানের এই ধরনের সংস্কৃতি ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র প্রতিরোধকে আরও উসকে দেবে।

এদেরই একজনের কথায়, ‘ফিলিস্তিনিদের রোজ যেভাবে সেনাবাহিনীর সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়, তারপরও তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করে যাবে যেন কিছুই হয়নি – এবং এই বাস্তবতার মধ্যে বাস করা লোকগুলো হাতে অস্ত্র তুলে নেবে না – এটা ধরে নেওয়াটা আসলে খুবই বোকার মতো চিন্তাভাবনা, আর সেটা মানবিকতার ভাবনা বিবর্জিতও বটে! অবস্থা আসলে ক্রমশই আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে!’ বিবিসি বাংলা

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা

ছবি: সংগৃহীত

অ্যন্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে নতুন বলের বাড়তি সুবিধা বেশ ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছিল বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সময় গড়াতেই বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় দুই ক্যারিবিয়ান ব্যাটার মিকাইল লুইস ও আলিক অ্যাথানেজকে। জুটি গড়ে দুজনের ছুটতে থাকেন শতকের পথে। কিন্তু দুজনের কারও প্রত্যাশা পূরণ হতে দেয়নি বাংলাদেশ। দিনের শেষভাগে নার্ভাস নাইন্টিতে দুজনকে মাঠ ছাড়া করে প্রথম দিনের ইতি টানে বাংলাদেশ।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫০ রান করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিকে বৃষ্টি হানা দেয় ম্যাচে। বৃষ্টি থামার পর আলোক স্বল্পতায় ৮৪ ওভার হওয়ার পরই দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়াররা।

টস জিতে বোলিংয়ে নেমে মেডেন ওভারে শুরুটা ভালো করেন হাসান মাহমুদ। অন্যপ্রান্তে আরেক পেসার শরিফুল ইসলামও মেডেন ওভার নেন। উইকেটের দেখা না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার কার্লোস ব্রাথওয়েট ও লুইসকে বেশ কয়েকবার পরাস্ত করেন বাংলাদেশের দুই পেসার।

ইনিংসের অষ্টম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে আনা হয় তাসকিন আহমেদকে। এই পেসারই প্রথম ব্রেকথ্রু দেন দলকে। ১৪তম ওভারে তাসকিনের অফ স্টাম্পে পড়ে একটু ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেছিলেন ব্রাথওয়েট। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল আঘাত হানে পায়ে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। যদিও তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন ব্রাথওয়েট। তবে সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়নি।

তিনে নেমে টিকতে পারেননি কেসি কার্টি। ডানহাতি ব্যাটারকেও ফিরিয়েছেন তাসকিন। উইকেটে আসার পর থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন তিনি। তাসকিনের মিডল এবং লেগ স্টাম্পের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে থাকা তাইজুল ইসলামকে ক্যাচ দিয়েছেন কার্টি।

২৫ রানে দুই উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখান লুইস ও কেভম হজ। তবে হজ ২৫ রান করে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।

এরপর বাংলাদেশকে বেশ ভুগিয়েছে লুইস ও আথানজে জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরির পথে ছিলেন। তবে সম্ভাবনা জাগিয়েও কেউই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি।

ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মিরাজের বলে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে ভুল করেন লুইস। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় স্লিপে। ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শাহাদাত হোসেন দিপু। নব্বইয়ের ঘরে ২৬ বল আটকে থেকে আউট হন লুইস। ফলে ভেঙে যায় ২২১ বলে ১৪০ রানের জুটি। ২১৮ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯৭ রান করেন এই ওপেনার।

এর কিছুক্ষণ পরই ফিরেছেন আথানজেও। তাইজুলের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি স্কুপের মতো খেলেছিলেন আথানজে। যদিও তেমন গতি না থাকায় তার ব্যাটে লেগে বল উপরে উঠে যায়। সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক লিটন। দশটি চার ও একটি ছক্কায় ১৩০ বলে ৯০ রান আসে বাঁহাতি এই ব্যাটারের ব্যাটে। তিন রানের মধ্যে দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার সম্ভাবনা জাগায় বাংলাদেশ।

Header Ad

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী

ছবি: সংগৃহীত

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন চিত্রনায়িকা পরীমনির প্রথম স্বামী ইসমাইল হোসেন জমাদ্দার (৪২) ।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ভোর রাতে ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কের শিবচরের পাচ্চর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ইসমাইল জমাদ্দার মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের ছোট শৌলা গ্রামের ব্যাংক কর্মকর্তা জাকির হোসেন জমাদ্দারের ছেলে।

নিহত ইসমাইল হোসেনের চাচা কবির হোসেন জমাদ্দার বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন ইসমাইল ও তার বন্ধু মনির। শুক্রবার ভোর রাতে ঢাকা-ভাঙ্গা হাইওয়ের শিবচরের পাচ্চর এলাকায় একটি ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলটিকে পিছন থেকে ধাক্কা দেয়। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসমাইলকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইসমাইলের বন্ধু মনিরকে ঢাকা মেডিকেল থেকে আগারগাঁও পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে মনিরের একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে। মনির এখনো ওই হাসপাতালেই আছেন, বলে জানান তিনি।

শুক্রবার রাতে ইসমাইলের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। রাতেই জানাজা শেষে ছোট শৌলা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়েছে বলেও জানান তার চাচা।

এ বিষয়ে শিবচর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিল আহমেদ বলেন, শুক্রবার ভোর রাতের কোন এক সময়ে ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়কের মাদারীপুরের শিবচরের পাচ্চর এলাকায় একটি দুর্ঘটনায় ইসমাইল হোসেন জমাদার নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে কীভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মরদেহ শনাক্তের পর পরিবারের কাছে তা হস্তান্তর করা হয়েছে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৪৫