ইরানে কাসেম সোলাইমানির সমাধির কাছে জোড়া বিস্ফোরণ, নিহত ৭৩
ছবি সংগৃহীত
মার্কিন হামলায় নিহত কাসেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দুটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী ইরিব জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কেরমানে সাহেব আল-জামান মসজিদের কাছে একটি মিছিলে বিস্ফোরণে আরও ১৭১ জন আহত হয়েছে। প্রথম বিস্ফোরণটি হয়েছিল শহীদ সোলাইমানির মাজার থেকে ৭০০ মিটার দূরে। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি মাজার থেকে এক কিলোমিটার দূরে এবং যিয়ারতকারীদের যাবার পথ থেকে এমনকি চেক-পোস্টের বাইরে ঘটেছিল।
বিস্ফোরণের ভয়ানক শব্দ শুনে শহীদ গুলজারের দিকে যিয়ারতের জন্য যাওয়া যাত্রীরা দ্রুত রাস্তা ছেড়ে দেয় যাতে অ্যাম্বুলেন্সগুলো বিস্ফোরণস্থলের দিকে যেতে পারে। কেরমানের জরুরি বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের কেরমান হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
কেরমানের ডেপুটি গভর্নরের বরাত দিয়ে ইরিব জানিয়েছে, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। অনলাইনে প্রচারিত একটি ভিডিওতে রাস্তায় বেশ কয়েকটি লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ২০২০ সালে প্রতিবেশী ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত জেনারেল সোলেইমানির স্মরণে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে অংশ নিতে বুধবার কয়েকশ লোক সমাধির কাছে জড়ো হয়েছিল।
ইরনার সাংবাদিক জানিয়েছে, প্রথম বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ পরই দ্বিতীয় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তবে উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে বলে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে।
ইরানের জরুরি সংস্থার প্রধান বলেছেন, কাসেম সোলাইমানির শাহাদতের ৪র্থ বার্ষিকীতে বিস্ফোরণের ঘটনায় কেরমান প্রদেশের সকল চিকিৎসাকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাফর মিয়াদফার বলেন, এছাড়াও, পার্শ্ববর্তী শহরগুলোর অ্যাম্বুলেন্সগুলোও ওই ঘটনার কারণে সতর্ক এবং সক্রিয় রয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পর সোলেইমানিকে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি হিসেবে দেখা হতো। রেভল্যুশনারি গার্ডের বিদেশি অপারেশন শাখা, কুদস ফোর্সের কমান্ডার হিসেবে তিনি সমগ্র অঞ্চল জুড়ে ইরানী নীতির একজন স্থপতি ছিলেন।
তিনি কুদস ফোর্সের গোপন মিশনের দায়িত্বে ছিলেন ও হামাস এবং হিজবুল্লাহসহ মিত্র সরকার এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে নির্দেশিকা, অর্থায়ন, অস্ত্র, বুদ্ধিমত্তা ও লজিস্টিক সহায়তা প্রদানের দায়িত্বে ছিলেন। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালে তাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সোলেইমানিকে ‘বিশ্বের যেকোনো স্থানে এক নম্বর সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন তিনি।