অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নয় তুরস্কে নগদ অর্থ সাহায্যের আহ্বান
তুরস্কে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকার লোকজনকে সহযোগিতা করতে নগদ টাকার পাঠানোর অনুরোধ করেছেন উদ্ধারকারী ও দুর্যোগ বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না পাঠানোর অনুরোধও করেছেন তারা।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এতথ্য জানানো হয়েছে।
তুরস্কের দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক লুসি এসটফি বলেন, আমরা সবাই বুঝতে পারছি আমাদের সহযোগিতা করা দরকার এবং সহযোগিতা করতে চাই। তবে যেসব জিনিসের তাদের প্রয়োজন নেই সেসসব জিনিসপত্র পাঠানোর দরকার নেই।
তিনি বলেন, লোকজন চেষ্টা করছে এবং অধিকাংশ অপ্রয়োজনীয় জিনিস পাঠাচ্ছে। লোকজন মিনিবাসগুলো পুরোনো জামাকাপড়ে পরিপূর্ণ করছে। এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় হলো নগদ টাকা। এখানে সরকারি, বেসরকারি ও দাতব্য সংস্থাগুলো রয়েছে।
লুসি বলেন, তাদের শুধু এই মুহূর্তের জন্য নয়, সারা বছরের সহযোগিতার প্রয়োজন। আর সেজন্য টাকার দরকার। এর মানে এই নয় সহযোগিতা করতে মানুষকে অনুৎসাহিত করছি। আমি মানুষকে যথেষ্ট বোঝাতে পারছি না যে অপ্রয়োজনীয় সাহায্যগুলো আসলে কাজে আসছে না।
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানতেপে সিরিয়া সীমান্তের কাছে শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছেছে ৭ হাজার ৮০০ জনে। তবে এ সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়ে আছেন হাজার হাজার মানুষ।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা তাদের সবশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে মৃত্যুর এ তথ্য জানায়।
তুরস্কে আনুষ্ঠানিকভাবে ৫ হাজার ৮৯৪ জন মারা যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে, সিরিয়ায় ১ হাজার ৯৩২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজারও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এর আগে সোমবার (৬ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেসময় দেশ দুটির অধিকাংশ মানুষ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন। এরপর ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এবং বেশ কয়েকটি আফটারশকে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সিরিয়ার একটি অঞ্চল। এ ছাড়া তুরস্কের অন্তত ১০টি শহর বিধ্বস্ত হয়। এরই মধ্যে এসব শহরে তিন মাসের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট রিপেস তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য বলছে, তুরস্ক, সিরিয়ার পাশাপাশি সাইপ্রাস, লেবানন, ইসরায়েল, মিশরেও অনুভূত হয়েছে ভূমিকম্পটি। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার কম্পনসহ শতাধিক আফটারশক আঘাত হেনেছে ওই অঞ্চলে।
এসএন