বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, বাবা গ্রেপ্তার
নিহত গৌরব সিংগাল। ছবি: সংগৃহীত
চলছে বিয়ের অনুষ্ঠান আর কয়েক ঘণ্টা পরই হওয়ার কথা ছিল বিয়ে। আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছিল সবাই। তবে মুহূর্তেই আনন্দঘন সেই পরিবেশই হয়ে উঠল বিষাদময়। বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হলো বরের। আর তার পরদিন সন্ধ্যায় এই হত্যাকাণ্ডের দায়ে গ্রেপ্তার করা হলো বাবাকে। মূলত বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে ওই ব্যক্তি তার ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাাটি ঘটেছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম গৌরব সিংগাল। তিনি দিল্লির একটি জিমের মালিক। শুক্রবার (৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বুধবার বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে জিমের মালিককে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় দক্ষিণ দিল্লির বিয়ে বাড়ির আনন্দের উপলক্ষ বিষাদে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার পুলিশ জানিয়েছে, ২৯ বছর বয়সী গৌরব সিংগালকে তার বাবা রঙ্গলাল হত্যা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বাবা রঙ্গলাল রাগের বশবর্তী হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কারণ ছেলে গৌরব প্রতিদিন তাকে অপমান করতেন।
এনডিটিভি বলছে, দিল্লিতে ‘ফিট বক্স’ নামে একটি জিম চালাতেন গৌরব। পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডের সময় দিল্লির দেবলি এক্সটেনশনে তার বাড়িতে গৌরবের মুখে এবং বুকে ১৫ বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল এবং এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। মূলত বিয়ের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে গৌরব হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বলে পুলিশ জানিয়েছে। পারিবারিক ভাবেই তার এই বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যম বলছে, অতিথিরা বিয়ের শোভাযাত্রা শুরু করার জন্য এলাকায় উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে উৎসবে মেতে ছিলেন এবং বরের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তবে গৌরবকে অবশ্য সেই আনন্দ উদযাপনে দেখা যায়নি এবং তাকে কোথাও খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে অতিথিরা মরিয়া হয়ে অনুসন্ধান শুরু করলে একটি পার্কে গৌরবের মরদেহ পাওয়া যায় এবং এতে করে আনন্দের উপলক্ষটিকে শোক এবং বিষাদের আবহে রূপ নেয়।
এনডিটিভি বলছে, বৃহস্পতিবার ভোররাতে রাজু পার্কে গৌরব সিংগালকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং পরে তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয় বলে ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ (দক্ষিণ দিল্লি) অঙ্কিত চৌহান জানিয়েছেন।
এই ঘটনার পর গৌরবের বাবা গাঢাকা দেন এবং পরে বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদিকে ছেলেকে হত্যার ঘটনায় বাবাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আত্মীয়দের কাছে বিস্ময়কর ঘটনা হিসাবে সামনে এসেছে। মূলত এর আগে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পরিবারের কারও সংশ্লিষ্টতা থাকার কথা অস্বীকার করেছিল তারা।