ভারতের সংসদে দুই যুবকের অতর্কিত হামলা, আতঙ্কে পালালেন এমপিরা
ভারতের সংসদে অতর্কিত হামলা। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ঢুকে ‘রং বোমা’ ছোড়ার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশ তাঁদের আটক করেছে। এ ঘটনায় বড় ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে, এই সংসদ ভবনে প্রাণঘাতী হামলার ২২তম বার্ষিকীতে বুধবার লেকাসভায় আইনপ্রণেতাদের আসনে অতর্কিত ঢুকে পড়ে এক যুবক। এ সময় ওই যুবক হলুদ ধোঁয়া ছড়িয়ে সংসদ কক্ষে আতঙ্ক তৈরি করেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, বুধবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা দুই মিনিটের দিকে লোকসভার অধিবেশন চলাকালে বড় ধরনের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। ওই সময় দুই যুবক দর্শক গ্যালারি থেকে লাফিয়ে লোকসভার চেম্বারে ছুটে যায়।
টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, কালো জ্যাকেট পরা এক যুবক দর্শনার্থীদের আসন থেকে আইনপ্রণেতাদের বসার জায়গায় ঢুকে পড়েন। পরে তিনি লাফিয়ে আইনপ্রণেতাদের টেবিলের ওপরে উঠে যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা দেশটির একজন আইনপ্রণেতা এবং ইন্ডিয়া টুডে টিভি চ্যানেলের ছবিতে লোকসভায় সাদা এবং হলুদ রঙের ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
লোকসভার সদস্যরা বলেছেন, অনুপ্রবেশকারী সেখানে চিৎকার করে কিছু স্লোগান দিয়েছেন। সংসদ কক্ষের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক যুবক লাফিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ার পর চিৎকার করছেন। তানাশাহি নেহি চলেগা অর্থাৎ স্বৈরতন্ত্র চলবে না বলে স্লোগান দেন তিনি। এ সময় দ্বিতীয় এক ব্যক্তি দর্শক সারি থেকে ধোঁয়া স্প্রে করেন। পরে সংসদ সদস্য ও নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের দুজনকে ধরে ফেলেন।
স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে পুনরায় সংসদের অধিবেশন শুরু হয়। সংসদের স্পিকার ওম বিরলা বলেছেন, ‘‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি এবং দিল্লি পুলিশকে তদন্তে অংশ নিতে বলেছি।’’
‘‘দুজনকেই ধরা হয়েছে এবং তাদের সাথে থাকা জিনিসপত্রও জব্দ করা হয়েছে। সংসদের বাইরে থাকা সাগর শর্মা এবং ডি মনোরঞ্জন নামের অপর দুই ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’’
সংসদে দুই যুবকের অতর্কিত ঢুকে পড়ার এই ঘটনায় বেশ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে অধিবেশন চলাকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংসদে উপস্থিত ছিলেন না। ইন্ডিয়া টুডে বলেছে, অনুপ্রবেশকারী তার জুতার মধ্যে ধোঁয়ার কৌটা লুকিয়ে রেখেছিলেন এবং কৌটা থেকে ধোঁয়া বের হওয়ায় আইনপ্রণেতারা চেম্বার থেকে পালিয়ে যান।
এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজন নারীকেও আটক করেছে দেশটির পুলিশ। তবে তিনি সংসদ কক্ষের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা সাথে জড়িত সন্দেহভাজন দ্বিতীয় ব্যক্তি কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হওয়া যায়নি।
২০০১ সালে লোকসভার পুরোনো ভবনে সন্ত্রাসী এক এক ডজনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ওই সময় পাঁচ বন্দুকধারী সংসদে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এই হামলায় পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ দায়ী বলে অভিযোগ করে নয়াদিল্লি। সূত্র: রয়টার্স, এনডিটিভি।