আফিম উৎপাদনে শীর্ষে মিয়ানমার : জাতিসংঘ
ছবি সংগৃহিত
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে মিয়ানমার এখন বিশ্বের বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান সরকারের বাণিজ্যের ওপর দমন-পীড়নের পর আফগানিস্তানকে ছাড়িয়ে মিয়ানমার ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আফিম উৎপাদনকারী দেশ।
জাতিসংঘের ড্রাগস এন্ড ক্রাইম অধিদফতরের (ইউএনওডিসি) স্থানীয় প্রতিনিধি জেরেমি ডগলসের বরাত দিয়ে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার দেশটির ক্ষমতা দখলের পর ২০২২ সালে ‘নেশাজাত দ্রব্যের’ উৎপাদন নিষিদ্ধ করে। এর ফলে দেশটিতে আফিম উৎপাদনের হার ৯৫ শতাংশ কমে গেছে।
আফগানিস্তান সরকারের এমন আইনের কারণে এখন আফিম উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করেছে মিয়ানমার। দেশটির কৃষকরা আফিম চাষ করে ৭৫ শতাংশের বেশি আয় করেন। প্রতি কেজি আফিম ফুল থেকে গড়ে ৩৫৫ ডলার বা ৩৯ হাজার টাকা আয় হয়। লাভের দিক চিন্তা করে ২০০১ সালের পর এই প্রথম আফিম চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি জমি ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনওডিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধরণা করা হচ্ছে, এ বছর মিয়ানমার আফিমের উৎপাদন ৩৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১০৮০ টন করবে। যেটি হেরোইনের মূল উপাদান।
এছাড়াও ডগলস জানান, মিয়ানমারে ২০২১ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর দেশটির অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা এবং শাসন ব্যবস্থার পতন হয়। ফলে জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষকরা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গিয়ে আফিম চাষ শুরু করেন।
মিয়ানমারের অর্থনীতির মোট আনুমানিক মূল্য এক বিলিয়ন ডলার থেকে ২.৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে বেড়েছে, যা দেশটির ২০২২ সালের জিডিপির ১.৭ থেকে ৪.১ শতাংশের সমতুল্য বলে ইউওডিসি বলেছে। গত বছর মিয়ানমারে আনুমানিক ৭৯০ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদিত হয়েছিল বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।
মিয়ানমারের আফিম উৎপাদনে শীর্ষস্থান দখলের পেছনে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং সশস্ত্র সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দ্বন্দ্বকে দায়ী করছেন ইউএনওডিসির স্থানীয় প্রতিনিধি ডগলস।
তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি দেশটির জান্তা সরকার।
মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং লাওসের সীমানা মিলিত হয়েছে তথাকথিত গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলে। ঐতিহাসিকভাবে এই অঞ্চলগুলো আফিম ও হেরোইন উৎপাদনের একটি প্রধান উৎস। মিয়ানমার ও আফগানিস্তান বিশ্বজুড়ে বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ হেরোইনের উৎস।