সানীর অকাল মৃত্যুতে নাটকের সিন্ডিকেট নিয়ে প্রশ্ন

সদ্য প্রয়াত অভিনেতা শাহবাজ সানী। ছবিঃ সংগৃহীত
তরুণ অভিনেতা শাহবাজ সানীর হঠাৎ এই মৃত্যু কেউ মানতে পারছেন না। কারণ তার ঘনিষ্ঠরা দাবি করছেন একেবারেই সুস্থ ছিলেন অভিনেতা। তার মৃত্যুর পর অনেকে প্রশ্ন তুলছেন নাটকের সিন্ডিকেট নিয়ে।
রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ৩টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেতা শাহবাজ সানী।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরেই নিজ গ্রাম লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নিয়ে যাওয়া হয় সানীর মরদেহ। বাদ জোহর জানাজা শেষে অভিনেতাকে দাফন করা হয় বলে জানিয়েছেন নাট্য পরিচালক মাসরিকুল আলম।
শাহবাজ সানীর মৃত্যুর পর ঘনিষ্ঠরা প্রশ্ন তুলেছেন নাটকের সিন্ডিকেট নিয়ে। জানিয়েছেন সানী সিন্ডিকেটের শিকার। কাজ করার তুমুল ইচ্ছা থাকলেও অনেকের সঙ্গে কাজ করতে পারছিলেন না। বাদও পড়ছিলেন কাজ থেকে। কাজ নিয়ে অভিমান ছিল তার।
নির্মাতা ইমরান রবিন সানীর প্রয়াণে অভিমান করে লিখেছেন, সানীর অকাল মৃত্যু আবারও প্রমাণ করল আমাদের সময় যখন তখন শেষ হয়ে যাবে। কী হবে এত সিন্ডিকেট, অহংকার আর অভিশাপ দিয়ে...সময় তো অল্প।
পরিচালক আমিনুল শিকদার লিখেছেন, মানুষ মারা গেলে কদর বেড়ে যায়।’ একই কথা লিখেছেন আরেক অভিনেতা সিয়াম নাসির। তিনি লিখেছেন, ‘মানুষ মারা গেলে ভালোবাসা উথলাইয়া পড়ে। বেঁচে থাকতে খবর লয় না।
পরিচালক ইমরান রবিন আরও বলেন, এই সময়ে চরিত্র অভিনেতাই নয়, পরিচালকসহ সবার জন্য সিন্ডিকেট প্রকট আকার ধারণ করছে। এই সিন্ডিকেটে একজনের হয়ে কাজ করলে অন্যরা তাকে নিয়ে কাজ করতে চাইবে না। সামনে এক কথা বলে পেছনে আরেক কথা বলে বেশির ভাগ শিল্পী। এখন সবাই সানীর প্রশংসা করছে, বলছে ভালো অভিনেতা ছিল। সানী চাইত সবার সঙ্গেই কাজ করতে। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে সেই সুযোগ অনেক কম পেয়েছে। তার জন্য যদি কেউ নিঃস্বার্থভাবে কিছু করত, তাহলে সে মানসিকভাবে আরও ভালো থাকত।
‘জামাইয়ের মাথা গরম’ নাটকটিতে প্রধান চরিত্রে কাজ করেন সানী। এ চ্যানেলের স্বত্বাধিকারী রাকিব চাকলাদার ও চ্যানেলটি নাট্য নির্মাতা প্রিন্স রোমান।
প্রিন্স রোমান এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, দিয়াবাড়ির উত্তরা উত্তরের মেট্রোরেল স্টেশনের পাশে আমরা তিনটা নাটক নিয়ে কথা বলছিলাম সানীর সঙ্গে। তখন রাত সোয়া ১০টা বাজে। এর মধ্যে হঠাৎ সানী প্রচণ্ড কাশতে থাকে। পাশাপাশি ঠান্ডায় সর্দি ছিল। কাশি বেশি হলে সে একসময় আমাদের কাছ থেকে উঠে পাশে যায়। তখনো কাশছিল। সে সময়েই হঠাৎ দেখি, সে পড়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাই।
চ্যানেলের স্বত্বাধিকারী রাকিব চাকলাদার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সানী ভালো অভিনেতা ছিল, কিন্তু কেউই তাকে প্রধান চরিত্রে সুযোগ দেয়নি। সে নাট্যাঙ্গনে পলিটিকসের শিকার। তাকে সাপোর্ট দিতেই আমরা একটার পর আরও তিনটা নাটকের নিয়ে কাল কথা বলছিলাম। সেই মিটিংই যে সানীর জীবনের শেষ মিটিং হবে, সেটা আমাদের কষ্ট দিয়েছে।
নির্মাতা ইমরাউল রাফাতের ‘কাছে আসার পর’ নাটক দিয়ে শোবিজে পা রাখেন শাহবাজ সানী। এরপর ছোট পর্দার নিয়মিত মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। চরিত্রাভিনেতা হিসেবে শুরু করলেও কেন্দ্রীয় চরিত্রেও দেখা গেছে সানীকে।
২০১৮ সালে গোলাম কিবরিয়া ফারুকীর পরিচালনায় প্রথমবার ‘আবদুল্লাহ’ নাটকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। তার উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে আরও রয়েছে ‘ম্যাচ মেকার’, ‘আহারে মন’, ‘তুমি আছো হৃদয়ে’, ‘আনারকলি’।
