দশ মাসে ৪০ বাংলা সিনেমার দর্শক মাত্র ৫৩ হাজার
ঢাকাই সিনেমার ভীত বর্তমানে নড়বড়ে। একেবারেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে সিনেমার জগৎ। সিনেমা হলগুলো বন্ধ হতে হতে বর্তমানে এর সংখ্যা হাতেগোনা। প্রতিবছর সিনেমা নির্মাণের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। এতে করে নতুন সিনেমার চাহিদা, ভালো মান এবং সময়োপযোগী সিনেমা নির্মাণের অভাবে ধুঁকছে সিনেমা হলের ভবিষ্যত।
গত বছর দুই-তিনটি সিনেমা ছাড়া মুক্তিপ্রাপ্ত অধিকাংশ সিনেমার ভাগ্যে জুটেছে চরম ব্যর্থতা। এ কারণে সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে যায়ওয়ার উপক্রম হয়েছে।
তাই বাকি হলগুলো টিকিয়ে রাখতে এবং দর্শকদের হলমুখী করতে বছরে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদেশি ভাষা তথা হিন্দি সিনেমা আমদানির জন্য এক হয়েছেন চলচ্চিত্রের ১৯ সংগঠন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বরাবর লিখিত প্রস্তাব পেশ করেছেন এই সংগঠনের নেতারা। হলমালিকরা এতদিন মুখিয়ে ছিলেন সদ্য মুক্তি পাওয়া শাহরুখ খানের ‘পাঠান’ সিনেমাটি নিয়ে। তাদের দাবি ও ধারণা ছিল এই সিনেমা আমদানি করে দর্শকদের হলমুখী করতে পারবে। কিন্তু ঢাকাপ্রকাশ-এর প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে ভিন্ন তথ্য ও খবর। বাংলাদেশের মুক্তি পাচ্ছে না ‘পাঠান’।
এ বিষয়টি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় একটি সূত্র ঢাকাপ্রকাশ-কে নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, পাঠান মুক্তির প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি আদেশ অনুযায়ী উপমহাদেশীয় ভাষায় তৈরি করা চলচ্চিত্র বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শনের অনুমোদন দেওয়ার সুযোগ নাই।
এসব বিষয়ে দুঃখ ও হতাশা প্রকাশ করে গত দশমাসে মুক্তি পাওয়া ৪০টি বাংলা সিনেমার হল রিপোর্ট জানালেন লায়ন সিনেমা হলের কর্ণধার মির্জা আবদুল খালেক।
শনিবার (৪ মার্চ) রাজধানী মগবাজারের একটি রেস্তোরায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এই সম্মেলনে মির্জা আবদুল খালেক এমন কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমার লায়ন সিনেমা হলটি মাল্টিপ্লেক্স করেছি গত মাস হয়েছে। এই দশ মাসে আমার এখানে ৪০টি বাংলা সিনেমা মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই ৪০টি সিনেমা চালিয়ে মাত্র ৫৩ হাজার টিকিট বিক্রি করেছি। এর মধ্যে ‘পরাণ’ এবং ‘হাওয়া’ সিনেমা দুটির টিকিট সেল হয়েছে মোট ৩৬ হাজার। আর বাকি ৩৮টি সিনেমার মাত্র ১৭ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। সরকারি অনুদানের এমন ছবিও আছে যেগুলো চালিয়ে একটি শোতে একটি টিকিটও বিক্রি হয়নি। তাহলে আমরা কীভাবে সিনেমা হল খোলা রাখব। এমন চলতে থাকলে আমাদের সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদ, প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেনসহ সংগঠনটির অন্যান্য নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সিনেমা মুক্তির দাবিও করেন তারা।
এএম/এমএমএ/