কানের সেরা পরিচালক রুবেনই বিচারকমন্ডলীর প্রধান
ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবের দুবারের সেরা পদক ‘পাম দ অর’ বা ‘স্বর্ণপাম’ জেতা পরিচালক সুইডেনের রুবেন এলসলুন্দকে আসছে ৭৬তম আন্তজাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বিচারকমণ্ডলীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছে।
আগামী ১৬ থেকে ২৭ মার্চ টানা ১১ দিনের আসর বসবে ফ্রান্সের কান শহরে।
নিজের চলচ্চিত্র বানানোর দক্ষতার জন্য বিদ্যালয় জীবন থেকেই খ্যাতিমান রুবেন এলসলুন্দ ঠিক ৫০ বছর পর তার সুইডেনের বিশ্বখ্যাত অভিনেত্রী, তিন বারের অস্কারজয়ী, বিশ্বের ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী নায়িকা ‘ইনগ্রিড বার্গম্যান’র জায়গায় বসবেন। ১৯৭৩ সালের কানের প্রধান জুরি ছিলেন এই মোটে ৬৭ বছরে চলে যাওয়া অনিন্দ্য সুন্দরী অভিনেত্রী।
কানের প্রধান বিচারকের খবর পেয়ে রুবেন এলসলুন্দ বলেছেন, ‘আমি খুশি, গর্বিত ও সম্মানিত এবং এই বিশ্বাসগুলোকে নিয়ে এ বছরের কান চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতার বিচারকমণ্ডলীর প্রধান হলাম।’
এই প্রতিযোগিতার অংশ হতে পারা একটি অনুগ্রহ, কানের অতিথি, দর্শক ও সমঝদারদের সঙ্গে মিলে। আমি আন্তরিক ও অকৃত্রিম যখন আমি বলি যে, সিনেমা শিল্প তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণকালে আছে যেকোনো সময়ের তুলনায়, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘সিনেমার একটি মৌলিক দিক আছে-এখানে আমরা একসঙ্গে দেখি এবং এটি যা দেখায় ও তৈরি করে এবং অভিজ্ঞতার যে তীব্রতা তৈরি করে, তার তুলনায় এর প্রতি আরও মনোযোগ দাবি করে। এটি আমাদের একটি ভিন্নভাবে প্রতিফলনে নিয়ে যায় যখন আমাদের ডেপোমিন (মস্তিস্কের স্নায়ুকোষগুলোর মধ্যে সংকেত পরিবহনকারী হরমোন) আলাদা, আলাদা পর্দার সামনে বিপুল বেগে প্রবাহিত হয়।’
বিখ্যাত এই সুইডিশ পরিচালকের কানের সঙ্গে গভীর ও সবচেয়ে কার্যকর সম্পর্ক রয়েছে। রুবেন এলসলুন্দের ছয়টি ফিচার ছবির পাঁচটিরই কানে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছে। শুরুটি তিনি করেছেন ‘ইনভলেন্টি (অনৈচ্ছিক)’র মাধ্যমে, তার এই ছবিটি দলগত সাইকোলজির ওপর, ২০০৮ সালে ‘আঁ সাঁতে রিগা’ জয় করেছে।
পরের ছবিটি তার ‘প্লে’ বা ‘খেলা’। একদল সুইডিশ-সোমালি কিশোরের, যারা একটি গ্যাং বা দল, তারা দুর্বলতর সাদা বালকদের শিকার করে। প্রতিযোগিতার ডিরেক্টরস ফ্রন্টলাইন, প্যারালাল সেকশন বিভাগে ২০১১ সালে খেলেছে।
তিন বছর পর এই দারুণ চলচ্চিত্র পরিচালক আবার ফিরে এলেন তার প্রিয় আসরে, এবার তিনি ফরাসিদের আল্পসে সেট করেছেন। পারিবারিক কমেডি, ছবিটির নাম হলো ‘ফোর্স মাখর’। এই কানেই ওয়াল্ড প্রিমিয়ার হয়েছে ও ‘আঁ সাঁতে রিগা’ পুরস্কার জয়ের মাধ্যমে জুরি বোর্ডের পুরস্কারটি জয় করে ফিরল।
তিনি সামজিক ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপের ছবি ‘দ্য স্কয়ার’ নিয়ে এলেন কানে ২০১৭ সালে ও জয় করলেন এবারের ‘স্বর্ণপাম’ বা ‘পাম দ্য অর। ২০২২ সালে তিনি তার ‘স্বর্ণপাম’ নিয়ে ফিরলেন ‘ট্রায়াঙ্গেল অব স্যাডনেস’ দিয়ে তার এই ছবিটি এবারের অস্কারের বেস্ট পিকচার্স, অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে ও সেরা পরিচালকের তিনটি বিভাগে লড়ছে।
সুইডেনের গুটেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম বা সিনেমা বিভাগের ছাত্র তাদের কৃতি সন্তান রুবেন এলসলুন্দ। ‘দ্য গিটার মঙ্গোলোয়িড’ নিয়ে ২০০৪ সালে চলচ্চিত্র ভুবনে ফিচার ছবিতে যাত্রা করেছেন। জার্মানির সেরা চলচ্চিত্র উৎসব বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে তিনি ‘গোল্ডেন বিয়ার’ নামের সেরা পুরস্কারটি নিয়ে ফিরেছেন ২০১০ সালে ‘ইনসিডেন্ট বাই অ্যা ব্যাংক’ দিয়ে।
ওএফএস/