সরকারি অনুদানের সিনেমায় প্রযোজক নিজেই পরিচালক, মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ
সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘শিরিনের একাত্তর যাত্রা’র মূল পরিচালককে বাদ সহকারি পরিচালক দিয়ে সিনেমার শূটিং সম্পন্ন করে প্রযোজক নিজেই হয়েছেন পরিচালক।
রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বরাবর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অনুদান পাওয়া মুল পরিচালক এমদাদুল হক খান।
লিখিত অভিযোগে এমদাদুল হক খান উল্লেখ করেন, প্র্রায় ১২ বছর ধরে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নাটক নির্মাতা হিসেবে কাজ করে আসছেন। তার পরিচালিত প্যাকেজ ও ধারাবাহিক নাটক বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ দেশের স্বনামধন্য স্যাটেলাইট টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে।
এ ছাড়া, ‘মন নিয়ে লুকোচুরি’ নামে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায়ও রয়েছে।
২০২০-২১ অর্থ বছরে ‘শিরিনের একাত্তর যাত্রা’ নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণায়লয় থেকে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত হয়। সেখানে পরিচালক হিসেবে এমদাদুল হক খান ও প্রযোজক হিসেবে দীপক চৌধুরীর নামে প্রজ্ঞাপন হয়। যার সংবাদ দেশের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়ায় প্রচার করা হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অনুদান প্রাপ্তির পূর্বে অনুদান কমিটি পরিচালক এমদাদুল হক খানের ইন্টারভিউ গ্রহণ এবং তার নির্মাণাধীন ১০টি নাটকের ডিভিটি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির প্রত্যয়নপত্র, শিক্ষাগত সনদের কপি জমা নেন। কিন্তু অনুদান প্রাপ্তির দেড় বছর পার হলেও বার বার তাগাদা দেয়ার পরও প্রযোজক দীপক চৌধুরী তাকে কোনো স্ক্রিপ্ট প্রদান করেননি এমনকি তাকে নিয়ে কয়েকটি শূটিং লোকেশন দেখলেও শূটিংয়ের বিষয়ে কিছুই জানাননি।
গত ৭ সেপ্টেম্বর চিত্রগ্রাহক রিপন রহমান খানের মাধ্যমে জানতে পারেন, চলতি বছরের ৯, ১০, ১১ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের হোতাপাড়ায় সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘শিরিনের একাত্তর যাত্রা’র শুটিং হচ্ছে।
বিষয়টি প্রযোজক দীপক চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘শূটিংয়ের সব কিছু ফাইনাল। সব কিছু রিপন রহমান খান ও সহকারী পরিচালক গাজী জাকির হোসেন ঠিক করেছেন। তুমি চাইলে শূটিং দেখতে যেতে পারো, তবে কোনো কাজ করতে পারবে না।’
বিষয়টি একজন পরিচালকের জন্য অসম্মানজনক। পরবর্তী সময়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিনা অনুমতিতে এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত পরিচালককে বাদ দিয়ে ৯, ১০, ১১ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের হোতাপাড়ায় শূটিং সম্পন্ন করেন দীপক চৌধুরী।
ওই শূটিংয়ে অংশ নেন, শহিদুল ইসলাম সাচ্চু, শিরিন আলম, তাহমিনা অথৈ, সাদমান, লাবন্যসহ বেশ কয়েকজন শিল্পী। পরবর্তীকালে তারা ফেসবুকে শূটিংযের ছবিও আপলোড দেন। মূল পরিচালককে বাদ দিয়ে একজন সহকারি পরিচালককে দিয়ে শূটিং সম্পন্ন করায় স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ ছাড়া, বিষয়টি সরকারি অনুদানের নীতিমালা লঙ্ঘন হয়েছে।
এ ব্যাপারে দীপক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘তার নাম আমিই দিয়েছিলাম। পড়ে বাদ দিয়েছি। শুটিং এখনো শেষ হয়নি। আর সরকারি প্রজ্ঞাপনে তার নামও ছিল না।’
এ সম্পর্কে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাবেক সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘এটা অনিয়ম। মুল পরিচালককে বাদ দিতে চাইলে তার কাছে অনাপত্তিপত্র নিতে হবে। পাশাপাশি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিতে হবে।’
এএম/এমএমএ/