পরিবারপ্রতি বাজার ব্যয় বেড়েছে ৫-১০ হাজার টাকা
কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, তেল, ডাল ও আটা প্রতিটি পণ্যের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে পরিবারপ্রতি বাজার খরচ বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। এমনটাই জানিয়েছেন বাজার করতে আসা সাধারণ ক্রেতারা।
মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারে বাজার করতে এসেছেন রফিকুল ইসলাম। তিনি ঢাকাপ্রকাশ-এর ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। অনেক দাম বেড়েছে। সব কিছুরই দাম বৃদ্ধি। খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮০০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৭৫০ টাকা। তেলের দাম তো দিন দিন বাড়ছেই।’
অন্য একজন লাইভ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘মাছের দাম তুলনামূলকভাবে ঠিক আছে। তবে অন্য প্রতিটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমার মাসিক বাজার খরচ আগে ১০ হাজার ছিল এখন ১৫ হাজারেও কিছু হচ্ছে না।’
আব্দুর রহমান নামের আরেকজন বলেন, ‘আমি বেশি বাজার করি না। আমার বাসার বাজার আমি করি না, তাই দাম কত বৃদ্ধি পেয়েছে সেটার সঠিক হিসাব দিতে পারব না। আজকে অনেকদিন পর বাজারে এসেছি। হাতে থাকা টমেটোর পটলা দেখিয়ে বলেন, এক কেজি পাকা টমেটো কিনেছি ৫০ টাকা দিয়ে, এটা আগে কত ছিল সেটা আমার জানা নেই।’
মিজানুর রহমান নামের আরেকজনকে কাঁচাবাজার করার সময় বাজার দর সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘নো ওয়ে, নো ওয়ে, এটা মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। প্রত্যেকটা পণ্যের দাম বেড়েছে। তেলের দাম যেটা বেড়েছে বলার মতো না। আমার ধারণা মাসিক খরচ ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তারা কোনোভাবেই কোনো কাজ করছে না, তাদের ইমিডিয়েটলি চেঞ্জ করা দরকার।’
অন্য একজন বলেন, দাম বাড়া কমা আমদানির উপর নির্ভর করে। এই বাজারে যে দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে কৃষক কিন্তু তার তিন ভাগের এক ভাগও পায় না। মধ্যস্বত্বভোগীরা ফায়দা নিচ্ছে। সরকারের দায়িত্ব বাজার মনিটর করা। বাজারে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। পরিবহন খরচ নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
মাছের বাজারে দেখা হয় শফিকুল ইসলাম নামরে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারের যে অবস্থা উচ্চ-মধ্যবিত্তরাও নিম্ন মধ্যবিত্তের কাতারে নামিয়ে দিয়েছে। আমি গত ৫ বছরেও এমন দাম দেখিনি।
হাতে থাকা টাকার বান্ডিল দেখিয়ে তিনি বলেন, এখানে ২০ হাজার টাকা আছে আমি বাজার করতে এসেছি। আমি জীবনে যা করিনি আজ তাই করলাম। এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) বাতাসি মাছ, এক পোয়া মেনিমাছ কিনেছি। যে মাছ আগে কিনেছি ৫০০-৬০০ টাকা কেজি সেই মাছই এখন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি। আমার মাসিক বাজার খরচ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার ও কৃষি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে বাজারের এমন অস্থির চিত্র। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। আটা ময়দার দাম কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। খামারে চাষ করা বিভিন্ন মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা। নদী ও খাল-বিলের মাছের দাম অন্য সময়ের চেয়ে কেজিতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বাড়তি চাওয়া হচ্ছে। গরুর মাংস ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে দোকান ভেদে। গত মাসেও গরুর মাংস ছিল ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগিও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। যা গত বছর এই সময়ে ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টার মধ্যে বিক্রি হতো।
মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে তেলাপিয়া মাছের কেজি ২০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় আকারের রুই মাছ ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে মাঝারি বা ছোট আকারের রুই কাতল, মৃগেল ও কালবাউশের দাম ২৮০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসএম/এমএমএ/