লবণের দাম নিয়ে কারসাজি করলেই মামলা
কোরবানির ঈদে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় লবণ নিয়ে কোনো কারসাজি করলেই মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান।
বুধবার (২৯ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের সম্মেলনকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সফিকুজ্জামান বলেন, চামড়া নিয়ে এ বছর যাতে কোনো খবরের শিরোনাম না হয় তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কোরবানির পশুর চামড়া জাতীয় সম্পদ। তাই এবার চামড়া সংরক্ষণে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান কঠোর হবে। দেশে চাহিদার তুলানায় বহুগুণ বেশি লবণ আছে। লবণের দাম নিয়ে কেউ কারসাজি করলে শুধু জরিমানা নয়, মামলও করব।
কাঁচা চামড়ার গুণগত মান বজায় রাখা ও লবণের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘কোনো উৎসব এলেই জিনিসের দাম বেড়ে যায়। দেশে মোট লবণের চাহিদা ২৩ লাখ টন। কোরবানি ঈদে লাগে ১ লাখ টনের কম। মজুদ রয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টন। তারপরও ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা লবণের বস্তা ১১০০ টাকা হয়ে গেছে। প্রতি বস্তায় ৭৫ কেজি লবণ থাকে। প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকার বেশি হবে না। দেশে যথেষ্ট লবণের মজুদ রয়েছে। চামড়া ব্যবসায়ীরা ৮০ শতাংশ লবণ সংগ্রহ করেছেন। তাই কোনো ক্রমেই লবণের বেশি দাম নেওয়া যাবে না।
অসাধু লবণ ব্যবসায়ীদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘এবার ঈদের চামড়া নিয়ে আগের মতো হতে দেওয়া যাবে না। লবণের অভাবে চামড়া পচে যাওয়ায় গতবার রাজশাহীতে পদ্মা নদীতে চামড়া ফেলে দিতে হয়েছিল। চট্টগ্রামেও ট্রাক থেকে চামড়া ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই সুযোগ দেওয়া হবে না। দেশে যথেষ্ট লবণ রয়েছে। একদিনে প্রচুর লবণ লাগে এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কারসাজি করে লবণের দাম বাড়িয়ে দেয় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী। এবার তা হতে দেওয়া যাবে না। গোয়েন্দা সংস্থাও তৎপর। ভোক্তা অধিদপ্তরও আগের চেয়ে কঠোর অবস্থানে। ভোক্তা অধিদপ্তরের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সবাই মাঠে থাকবে। যাতে লবণের দাম কেউ বাড়াতে না পারে। জেলা প্রশাসন থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরও তৎপর হতে বলা হয়েছে। কেউ লবণের দাম বেশি নিলেও তাৎক্ষণিকভাবে মামলা করা হবে।
ভোক্তা অধিদপ্তরের ডিজি আরও বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ে ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাঁচা চামড়া রাখা যায়। তবে গরমে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার বেশি রাখলে নষ্ট হয়ে যায়। একটা গরু ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায় কেনা হয় কোরবানির জন্য। কোরবানির চামড়ায় ৭ থেকে ৮ কেজি লবণ লাগিয়ে বা মাখিয়ে দিলে পচার কোনো সুযোগ নেই। তাই চামড়ায় লবণ লাগানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, সবাইকে সচেতন করার জন্য এবার ৩ লাখ পোস্টার করা হয়েছে। পশু জবাই থেকে শুরু করে ছিলা ও চামড়া সংগ্রহ করা সব কিছুর ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়েছে। লবণ মাখিয়ে দিলেই চামড়া পচবে না, সংরক্ষণ করা যাবে জাতীয় এ সম্পদ।’
সভায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপিত মো. আফতাব খান, বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নুরুল কবিরসহ সংশ্লিষ্টরা।
জেডএ/এসএন