আইইবিতে ৩য় নারী প্রকৌশলী সম্মেলন হলো
বাংলাদেশের প্রকৌশলীদের তৈরি পদ্মা বহুমুখী সেতু আজ ‘বিশ্বের বিস্ময়’ হয়ে সবাইকে আলোকিত করে চলেছে। এই সময় ‘আন্তর্জাতিক নারী প্রকৌশলী দিবস ২০২২’ পালন করলো তাদের সবার একমাত্র ও সর্ববৃহৎ পেশাজীবি সংগঠনটি।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (আইইবি) ঢাকার রমনার প্রধান কার্যালয়ে সম্মেলনটি হয়েছে, বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ অফিসার সাইফুল ইসলাম তালুকদার রনি।
‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’তে তৃতীয় নারী প্রকৌশলী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প উদ্বোধনের আগে অত্যন্ত খুশি মনে অংশগ্রহণ করেছেন রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও ৭৪ বছরের পুরোনো আইইবির প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. নূরুল হুদা, সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর-গেস্ট অব অনার, সম্মানী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাৎ হোসেন (শিবলু), অ্যাকাডেমিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সেকশনের প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসাইন-স্পেশাল গেষ্ট।
স্বাগত বক্তব্য দিয়েছেন আইইবির আরেকটি উদ্যোগ ‘দি ইঞ্জিনিয়ার্স ফাউন্ডেশন’র আহবায়ক এবং অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের সম্মানী সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শেখ তাজুল ইসলাম তুহিন।
‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন ইঞ্জিনিয়ার ডে’র প্রধান উপলক্ষ্য ও আয়োজনের মূল নারী প্রকৌশলীরা বিপুলভাবে এই আয়োজনটি সফল করেছেন। তাদের মধ্যে আইইইই (ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলকেট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার্স)’র ২০২২ উই (উইমেন ইন ইঞ্জিনিয়ারিং)’র নির্বাচিত চেয়ার বা সভাপতি এবং বুয়েটের (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়) ইইই বিভাগের অধ্যাপক, আইইই’র নতুন উদ্যোগ-ইতিহাস কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. সিলিয়া শাহনাজ আয়োজনের অন্যতম মধ্যমণি ছিলেন। তার সঙ্গে আলোচনা করেছেন সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক ও জনপদ বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রওশন আরা খানম। সভাপতি ছিলেন-বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের কম্পানি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার দেওয়ান সামিনা বানু।
উপস্থাপনা করেছেন ইঞ্জিনিয়ার ঝরা ভৌমিক। প্রকৌশলী সোনিয়া ও মৌসুমীসহ সরকারের এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নামকরা নারী ইঞ্জিনিয়াররা অংশ নিয়েছেন।
তারা জানিয়েছেন, ‘নারী প্রকৌশলীরা যেকোনো দেশের ও সমাজের উন্নয়নের অন্যতম রোল মডেল। উচ্চ শিক্ষায় সরকারি কো-এডুকেশনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেয়ে শিক্ষার্থীদের হার এখনো কম হলেও বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাদের পড়ালেখার হার বেশি। অন্যসব ক্ষেত্রের মতো দিন যত এগিয়ে চলেছে, প্রকৌশল এবং সংশ্লিষ্ট পেশাজীবনে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়ে চলেছে।’
‘তারা দক্ষতার সঙ্গে মেধা, যোগ্যতা ও কাজের ছাপ রেখে চলেছেন। আগামীতে সরকারি ও বেসরকারি সুযোগগুলো আরো বাড়বে। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলায় যে বিপ্লব ঘটেছে, তাতে মেয়েদের জীবন পুরোপুরি বদলে যাবে।’
‘শেখ হাসিনা সরকারের ১০টি প্রধান উদ্যোগের অন্যতম নারীর ধারাবাহিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত।’
‘প্রকৌশল শাস্ত্রেও নারীর ক্ষমতায়ন অব্যহত থাকলে সামনে আরো সুফল বাংলাদেশ ভোগ করবে। তবে এই খাতেও অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে, সন্তান পালনের জন্য কর্মবিমুখতা, উন্নত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগের অভাব রয়ে গিয়েছে। বরাবরের মতো বাংলাদেশের প্রতিটি বিবেকবান ও সমাজ সচেতন মানুষ কাজ করে চলেছেন।’
‘প্রতিটি বিভাগের নারীদের মূল্যায়নের মাধ্যমে আগামী দিনের সমৃদ্ধ ও সুখী বাংলাদেশ গড়া নিশ্চিত হবে’, বলে তারা জানিয়েছেন।
আশা করেছেন, বাংলাদেশের নারী প্রকৌশলী ও প্রকৌশলখাতে নারীদের মূল্যায়নে সবাই একত্রে কাজ করবেন।
ওএস।