বিশ্ববাজারে স্বর্ণের বড় দরপতন
গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়েছে। এ সময়ে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম প্রায় চার শতাংশ কমেছে। ফলে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৭০ ডলারেরও বেশি কমে বর্তমানে ১৮৫০ ডলারের নিচে নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে কমেছে রুপা ও প্লাটিনামের দাম। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমায় এরইমধ্যে দেশের বাজারেও এর দাম কমানো হয়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) গত বুধবার (১১ মে) থেকে দেশের বাজারে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে। নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মান বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ৭৬ হাজার ৫১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমিয়ে ৭৩ হাজার ১৭ টাকা করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৬২ হাজার ৬৩৬ টাকা করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮৭৬ টাকা কমিয়ে করা হয়েছে ৫২ হাজার ১৯৬ টাকা।
বাজুস দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেওয়ার সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ১ হাজার ৮৬০ ডলারের ওপরে। এরপর বিশ্ববাজারে লেনদেন হওয়া প্রতি কার্যদিবসেই স্বর্ণের দাম কমেছে। এতে গত চার সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে এসেছে।
গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ বা ৭১ দশমিক ৭৪ ডলার কমেছে। এর মধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেই কমেছে ১০ দশমিক ৪৪ ডলার বা দশমিক ৫৭ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮১১ ডলার। আর মাসের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম কমেছে ৮ দশমিক ২২ শতাংশ। স্বর্ণের পাশাপাশি গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রুপা ও প্লাটিনামের দামেও বড় পতন হয়েছে। এ সময়ে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স রুপার দাম দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক শূন্য ৯ ডলারে। মাসের ব্যবধানে এই ধাতুটির দাম কমেছে ১৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আরেক দামি ধাতু প্লাটিনামের দাম গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ৯৩৮ দশমিক ৫০ ডলারে। মাসের ব্যবধানে দামি এই ধাতুটির দাম কমেছে ৫ দশমিক ২১ শতাংশ।
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর পর এক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়ে দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। ফলে ৯ মার্চ দেশের বাজারে আবারও বাড়ানো হয় স্বর্ণের দাম। এ দফায় ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৭৯ হাজার ৩১৫ টাকা।
এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার ৬৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৮১৬ টাকা বাড়িয়ে ৬৪ হাজার ৯৬৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৬৪২ টাকা বাড়িয়ে করা হয় ৫৪ হাজার ৬২ টাকা। অবশ্য এরপর বিশ্ববাজারে টানা দরপতনের মধ্যে পড়ে স্বর্ণ। ফলে ১৬ মার্চ ও ২২ মার্চ দুই দফায় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়। এর মধ্যে ২২ মার্চ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে করা হয় ৭৭ হাজার ৯৯ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়ে ৭৩ হাজার ৬০০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৬৩ হাজার ১০২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৪৫৮ টাকা কমিয়ে ৫২ হাজার ৬০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর রোজা শুরু হলে দেশের বাজারে ঈদকেন্দ্রিক স্বর্ণালঙ্কারের বিক্রি কিছুটা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে দামেও। বিশ্ববাজারে খুব একটা দাম না বাড়লেও ১২ এপ্রিল ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৮৪৯ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস।
২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ৭৫ হাজার ৩৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৪৫৮ টাকা বাড়িয়ে ৬৪ হাজার ৫৬০ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ২২৪ টাকা বাড়িয়ে ৫৩ হাজার ৮২৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
তবে বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রবণতা দেখা দিলে ২৬ এপ্রিল আবারও দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়। সে সময় ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৭ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৯১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৫৮ টাকা কমানো হয়। আর ঈদের পর এক সপ্তাহ না যেতেই ১১ মে আরেক দফা স্বর্ণের দাম কমানো হয়।
এসএ/