সয়াবিন তেলের গুদামে অভিযান, জরিমানা
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে সয়াবিন তেলের বাজারে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ সময় সয়াবিন তেল মজুত করায় তিন ব্যবসায়ীকে ২ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
রবিবার (১ মে) বেলা ১১টার দিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তারের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানকালে কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের নিচতলার মুদিদোকানে তেলের সংকট দেখে তিনতলায় ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের গুদামে যান ভোক্তা অধিকারের এই সহকারী পরিচালক। সেখানে তিনি কয়েকটি গুদামের শার্টার খুলতেই দেখা মিলে কার্টন কার্টন সয়াবিন তেল। সেখান থেকে তেল বের করে বিক্রি করা হয় নিচতলার খুচরা মুদিদোকানিদের কাছে। এরপর পরই খুচরা বাজারে তেলের সংকট কাটতে শুরু করে।
বিসমিল্লাহ জেনারেল স্টোর নামের তেলের এক ডিলারের গুদামে ৫ লিটারের ৪০০ বোতল সয়াবিন তেল পান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। সেই প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে তাৎক্ষণিকভাবে অর্থ আদায় করা হয়। এ ছাড়া মজুত করা দুই হাজার লিটার সয়াবিন তেল মার্কেটের নিচতলার খুচরা ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করার নির্দেশ দেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
অভিযান শেষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ডিলারদের গতকাল শনিবার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে তেল সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু তারা সেটি না দিয়ে আজ মে দিবসের ছুটির সুযোগ নিয়ে বাড়তি দামে বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। তাই গোডাউনে অভিযান চালিয়ে সব তেল বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ থেকে তেল গোডাউনে নিতে পারবেন না ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। মার্কেটের নিচ থেকেই খুচরা ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করতে হবে।
ফাহমিনা আক্তার বলেন, ‘আমরা খুচরা ও পাইকারি বাজারের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে সয়াবিন তেল পরিশোধনকারী কোম্পানির মিলগেটেও তদারকি করছি। সেখান থেকে প্রতিদিন রেকর্ড পরিমাণ তেল সরবরাহ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বোতলের গায়ে উল্লেখ করা দামের চেয়ে কেউ এক টাকা বেশি দামে বিক্রি করলে জরিমানা করা হবে। কোনো ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এক হাজারবার অভিযোগ এলে এক হাজারবারই জরিমানা করা হবে। তিনি ভোক্তাদের অধিদপ্তরের হটলাইনে (১৬১২১ নম্বরে) অভিযোগ করতে আহ্বান জানান।’
পরে মার্কেটের নিচের খুচরা দোকানে ঘুরে ঘুরে তদারকি করেন ফাহমিনা আক্তার। এ সময় দুই-তিনজন ক্রেতা প্রতিদিন বাজার তদারকি করার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা আজ অভিযান চালিয়েছেন বলে তেল কিনতে পেরেছি।’
সিরাজুল ইসলাম নামের এক খুচরা ব্যবসায়ী বললেন, ‘৭-১০ দিন ধরেই সয়াবিন তেল চাহিদা অনুযায়ী পাচ্ছি না। প্রতিদিন আমার দোকানে কমপক্ষে ৫০ লিটার সয়াবিন বিক্রি হয়। কিন্তু পাই ১০ লিটার। ডিলারদের কাছে তেল এলেও তারা চুপিচুপি বেশি দামে বিক্রি করে দেন।’
তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে এক লিটার ও দুই লিটারের দুই কার্টুন তেল পেয়েছি। এক লিটারের বোতল ১৫৮ টাকা ও ২ লিটারের বোতল ৩১২ টাকায় কিনতে হয়েছে।’
বিক্রি করবেন কত টাকায় জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘১ লিটার ১৬০ টাকা ও ২ লিটার ৩১৬ টাকায় বিক্রি করব।’
এনএইচবি/এমএমএ/