‘মিল চললে বাজারে চিনির দাম এতো বাড়ত না’
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, অর্থনীতি ও বাজার দুই জায়গাতেই সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। সুগার মিলের যারা আখচাষী তারাই সুগার মিলের শ্রমিক, যার কারণে মিলগুলোতে লুটপাট হয়েছে। লুটপাটের কারণে মিলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের চিনির মিলগুলো যথারীতি চালানো হলে বাজারে চিনির দাম এতো বাড়তোনা। এখন চিনির স্বল্পতা দেখা দিয়েছে, চিনি খুজে পাওয়া যায়না- এগুলো হতোনা।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এর সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে এসএমই খাতের উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভুমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই সব কথা করেন।
রাজধানীর পল্টন টাওয়ারে কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইআরএফ ও এসএমই ফাউন্ডেশন। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় ও এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মাদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধা।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ এগিয়ে চলেছে, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। কিন্তু তারপরও দেশে আজকে যে অরাজকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে, ব্যবসার নামে যে লুটপাট হচ্ছে, মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে এগুলো সাংবাদিকদের আরও জোরালো ভাবে তুলে ধরতে হবে, এগুলো আরও ফোকাস করতে হবে।
অবাক লাগে বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে লক্ষ লক্ষ বেকার। ঋণগুলো যদি এসএমই ফাউন্ডেশনসহ ক্ষদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের দেয়া হতো তবে তাদের ব্যবসা আরও সমৃদ্ধশালী হতো। কিন্তু সেটা করা হচ্ছেনা।
আমাদের উন্নত বিশ্বের কাতারে যেতে হলে বেকার সমস্যা সমাধান করতে হবে। তা হলে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারবো। দেশে যদি ক্ষুধা, দারিদ্র ও বেকার সমস্যা থাকে তবে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ কিন্তু করতে পারবোনা। আমাদের এদিকে নজর রাখতে হবে।
এসএমই ফাউন্ডেশনের সীমাবদ্ধতায় সারাদেশে সেবা বাধাগ্রস্থ:
মূল প্রবন্ধে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, বড় বড় শিল্প এসএমই শিল্পের বাইরে। বর্তমানে সারা দেশে এক কোটির বেশি এসএমই উদোক্তা রয়েছে। অর্থনীতিতে এসএমইর অবদান ২৫ থেকে ৩২ শতাংশ করার কথা। কিন্তু ২৪ সালে তা হবে না। কারণ সীমাবন্ধতা রয়েছে।
মফিজুর রহমান আরও বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের অন্যান্য চ্যালেঞ্জ বা সীমাবদ্ধগুলো হচ্ছে, পর্যাপ্ত তহবিল/এন্ডাউমেন্ট ফান্ডের অভাব। এ জন্য আমরা উদ্যোক্তাদের ভালভাবে সেবা দিতে পারছিনা। আমাদের লোকবলের কারনে ঢাকার বাইরে খুব একটা কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। বর্তমানে মাত্র ২০০ কোটি টাকা তহবিল দিয়ে ফাউন্ডেশন চলছে। ব্যাংক সুদের হার কম হওয়ার কারণে আয়ও কমে গেছে। নিজস্ব ভবন না থাকায় ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে। ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনের কোনো প্লাটফর্ম না থাকায় উদ্যোক্তাদের বাজারজাত করণে বাধা তৈরি হচ্ছে। এছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়/অর্থ বিভাগ হতে বাজেট বরাদ্দ/সংস্থান না পাওয়া (রেভিনিউ বা ডেভেলপমেন্ট); ফাউন্ডেশনের আয়কর অব্যহতি প্রাপ্তির লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে অমিমাংসিত বিষয় ও এখাতে সরকারের কোনো উন্নয়ন প্রকল্প না থাকার মতো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেডএ/এএস