আবারও বেগুন মরিচের দাম ঊর্ধ্বমুখী
কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানের ফলে গত সপ্তাহে বেগুন, লেবু, শসার দাম কমে অর্ধেকে নেমে যায়। কিন্তু কয়দিন না যেতে আবারও বেড়ে গেছে ওই সব পণ্যের দাম। লেবুর ডজন ৪০ থেকে ৮০ টাকা, মরিচ ও বেগুনের কেজি ৪০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি করছে বিক্রেতারা। তবে বাড়েনি শসা, আদা ও পেঁয়াজের দাম। শসা কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁয়াজের কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। সোমবার (১১ এপ্রিল) কারওয়ান বাজারে সরেজমিনে ঘুরে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে। সিন্ডিকেটের জালে এসব পণ্য ভোক্তাদের অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
প্রথম রমজানে মরিচের কেজি ১০০ টাকা হলেও গত সপ্তাহে ভোক্তা অধিদপ্তর রাতে অভিযান পরিচালনা করে। এরফলে কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হয়। কিন্তু এ সপ্তাহে আবারও বেড়েছে দাম। তা ৪০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। এতো বেশি দাম কেন? জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের রবিউল ঢকাপ্রকাশ-কে জানান, ‘এই মরিচ মানিকগঞ্জের। ঝাল বেশি। তাই দামও বেশি, ৮০ টাকা কেজি।’
এদিকে বেগুনের দামও বাড়তি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। করিম বলেন, ‘বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামেই বিক্রি করছি। লম্বা বেগুন ৮০ টাকা কেজি। তবে সবুজ রংয়ের গোল বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজিও বিক্রি করা হচ্ছে। লেবুর দামও বাড়তির দিকে।
প্রথম রমজানে লেবুর ডজন সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে গেলে বাজার অভিযানের ফলে কিছুটা কমে গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ ৬০ টাকা বিক্রি হতে দেখা যায়। কিন্তু সেই লেবু বর্তমানে বেড়ে ডজন ৪০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
প্রথম রমজানে শসার কেজি ১০০ টাকা হলেও বর্তমানে কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি করছে বিক্রেতারা। বাজারে প্রচুর সরবরাহ থাকায় কমতির দিকে বলে বিক্রেতারা জানান।
রমজান মানে পেঁয়াজেরও চাহিদা বেড়ে যায়। তবে দেশে প্রচুর পেঁয়াজের উৎপাদন হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে কমতেই আছে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। মেসার্স মাতৃভান্ডারের কালাম শেখ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বর্তমানে প্রতি পাল্লা ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। সেই পেঁয়াজের কেজি ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আদার দামও কমে ৮০ থেকে ১২০ টাকা, রসুন ৫০ থেকে ১২০ কেজি বিক্রি করছে বিক্রেতারা।
সিন্ডিকেটের থাবায় এসব পণ্যের দাম বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। রবিবার ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ নেটওয়ার্কের উদ্যোগে এক ওয়েবিনারে পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান বলেন, ‘করোনায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাদের জন্য আরেকটি সমস্যা। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ‘ন্যায্যতার’ মূল্যবোধ দিয়ে গড়ে তুলতে না পারলে, দ্রব্যমূল্য কেন, কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না’।
বাংলাদেশ অটোরাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খোরশেদ আলম খান বলেন,‘ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে মজুতদার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। রাস্তার চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।’
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, ‘মূল্যবৃদ্ধির জন্য খাদ্যপণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে রাস্তার চাঁদাবাজি একটি বড় সমস্যা। পণ্য যতবার হাতবদল হয়, ততবারই দাম বাড়ছে। তার বাস্তব প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বাজারে।’
জেডিএ/