বৃহস্পতিবারের বাজারদর
বেড়েছে পেঁয়াজ আদা রসুন, স্থিতিশীল চালের দাম
কয়েক সপ্তাহ থেকে বাড়তেই আছে সয়াবিন তেলের দাম। এ সপ্তাহে বেড়ে ২ লিটার ৩৩৫ টাকা ও ৫ লিটার ৮০০ টাকায় ঠেকেছে। আদা, রসুনের দামও বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগির দামও বেড়ে ৩২০ টাকা কেজি হয়েছে। এছাড়া পেঁয়াজ, টমেটো, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির দামও উর্ধ্বেগতি। তবে স্থিতিশীল চালের বাজার। আগের দামেই আছে মাছ, গরু ও খাসির মাস, ডিমসহ অন্যান্য সবজির দাম। বৃহস্পতিবার ( ১০ মার্চ ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার বাজার ঘুরে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।
বেড়েছে পেঁয়াজ আদা রসুন আলুর দাম:
গত সপ্তাহে পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা পাল্লা বা ৬০ টাকা কেজি পাইকারি বাজারে বিক্রি করা হয়। যা খুচরা পর্যায়ে ৭০ টাকা কেজি। কিন্তু সপ্তাহের ব্যবধানে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) দাম বেড়ে পাইকারিতে ৬৪ টাকা, তা খুচরা পর্যায়ে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। মতলব বাণিজ্যালয়ের করিম বলেন, ‘গত সপ্তাহে ৩০০ টাকার পাল্লা আজ ৩২০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। একটু দুরে সেই পেঁয়াজ ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করছে। গত সপ্তাহের দেশি রসুনের ৫০ থেকে ৭০ টাকার কেজি এ সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ও চায়না ৯০ থেকে ১২০ টাকার রসুনের কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, দেশি ৯০ টাকার আদার কেজি ১০০ টাকাও চায়না আদা ১৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের সপ্তাহের মতোই আজও আলু পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে ৯০ থেকে ১০০ টাকা পাল্লা বা ১৪ থেকে ২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরা বাজারে তা ২০ থেকে ২৫ টাকা। টমেটোর দামও খুচরা পর্যায়ে বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। শিম ৪০ -৫০ টাকা, বেগুণ ৫০-৬০, কেজি, প্রতি পিস ফুলকপির ৩০ -৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া শসা ৩০ টাকা, গাজর ২০ টাকা, মুলা ২০ টাকা কেজি, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। মরিচও বেশি দামে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। আর করলা কেজি ১০০ টাকা বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।
বাড়তি দামেই ভোজ্যতেল বিক্রি:
সরকার প্রতি লিটার সয়ারিন তেল ১৬৮ টাকা নির্ধারণ করলেও সেই দামে বাজারে কোনো তেল পাওয়া যায় না। সরবরাহের ঘাটতির অজুহাতে বাড়ছেই তেলের দাম। ২ লিটার ৩১৫ টাকা ও ৫ লিটার ৮০০ টাকার কমে মিলে না বাজারে তেল। মিলমালিকরা কমালে বাজারে কমবে তেলের দাম বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
কারওয়ান বাজারের নিউ সোনারগাঁও জেনারেল স্টোরের রিপন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘ গত সপ্তাহ থেকে ৫ লিটার ৮০০ টাকায় কিনে ৮০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। কোন লাভ ছাড়াই বিক্রি করতে হচ্ছে। একই কথা জানান ইউসুফ জেনারেল স্টোরের ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘ ৫ লিটার ৮০০ টাকা কিনে ৮০০ টাকায় বিক্রি করতে বিক্রি করতে হচ্ছে। ডালের দামও কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। চিনিও বেশি দামে ৭৮ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে আগের মতো ছোলা ৭০ টাকা, আটা ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
চালের দাম স্থিতিশীল:
গত সপ্তাহে মিনিকেট চালের কেজিতে দুই টাকা বাড়লেও এ সপ্তাতে আর বাড়েনি। জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মেসার্স কুমিল্লা রাইস এজেন্সির মো. আবুল কাসেম ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘আগের সপ্তাহে মিনিকেটে ২ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও এ সপ্তাহে আর বাড়েনি। আগের দামেই বিআর-২৮ চালের কেজি ৪৭ থেকে ৪৯ টাকা, পারিজা ৪৪ তেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’
স্থিতিশীল মাছের বাজার:
আগের সপ্তাহের মতোই মাছের বাজার, বাড়েনি, কমেনিও। স্থিতিশীল বলে বিক্রেতারা জানান। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী এনামুল বলেন,‘ আকার ভেদে রুই ও কাতল ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি আকার ভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চাষের শিং মাছ ৩০০, দেশি শিং ৬০০-৭০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা ও দেশি ৫০০ টাকা, দেশি শোল ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, ট্যাংরা ৪০০ থেকে ৭০০, আইড় আকারভেদে ৪০০ থেকে ১২০০, ইলিশ মাছও ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
স্থিতিশীল গরু খাসির মাংস:
গত দুই সপ্তাহ থেকে গরুর মাংসের দাম বেড়ে ৬৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবারও সেই দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। কারওয়ান বাজারের মেসার্স খোকন এন্টারপ্রাইজের টিপু সুলতান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ থেকে ৬৫০ টাকা টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে গরুর মাংস।’
এদিকে গত সপ্তাহে পাকিস্তানি কর্ক ২৭০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও বৃহস্পতিবার ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। জননী মুরগির আড়তের আব্দুল ওহাব ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘ আগের মতো দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি, ব্রয়লার ১৫০ থেকে ১৭০ কেজি। তবে পাকিস্তানি কর্কের দাম বেড়ে সর্বোচ্চ ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। জনপ্রিয় খাসির মাংসের দোকানের নুরুল ইসলাম বলেন, আগের মতোই এ সপ্তাহে ৯৩০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। ডিমের দামও আগের সপ্তাহের মতোই ডজন সর্বোচ্চ ১১০ টাকা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বিক্রেতারা বলছেন, কোন জিসিনের দাম বাড়েনি? একটার সঙ্গে আরেকটা জড়িত। তাই তেলের দাম বাড়তে থাকায় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে। আবার একই পণ্য যে যার মতো বিক্রি করছে।
জেডএ/