ফেসবুকে দুস্থ ও অসহায় ছদ্মবেশী ৪ প্রতারক গ্রেপ্তার
চার ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুস্থ ও অসহায় সেজে প্রতারণা করত।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তাদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট।
এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২৭টি ফেসবুক আইডি, ১০টি মোবাইল, মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ ১৫টি সিম কার্ড ও প্রতারণালব্ধ নগদ দুই লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের এসি ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ জানায়, মো. জুয়েল রানা নামে ফেক আইডি থেকে ফেসবুক গ্রুপ ‘বক্সে বন্দি হাসানুর রহমান হোসাইন সাইবার টিম’ অজ্ঞাত এক অসুস্থ একটি শিশুর ছবি যুক্ত করে এবং ‘বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী বিশ্বাস’ নামক অপর একটি ফেসবুক ফেক আইডিসহ আরও প্রায় ২৭টি আইডি থেকে ‘আমরা বৃহত্তর পুরান ঢাকাবাসী’ নামক ফেসবুক গ্রুপসহ আরও বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে মিথ্যা সাহায্যের আবেদন করে মানুষের আবেগের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ প্রযুক্তির সাহায্যে এই প্রতারক চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করে এবং তার নেতৃত্বে ইন্টারনেট রেফারেল টিম গতকাল সোমবার রংপুর থেকে মো. রেজাউল ইসলাম (৪০), মো. হাফিজুল ইসলাম (২৪), মো. মেহেদী হাসান আকাশ (১৯) এবং সোমবার রাত ১০টায় মিরপুর থেকে মো. তানভীর আহাম্মেদকে (৩০) গ্রেপ্তার করে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২৭টি ফেসবুক আইডি, ১০টি মোবাইল, মোবাইল ব্যাঙ্কিং অ্যাকাউন্টসহ ১৫টি সিম কার্ড ও প্রতারণালব্ধ নগদ দুই লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এসি ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপ বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে আমরা রংপুর ও মিরপুর থেকে প্রতারকদের গ্রেপ্তার করি। তাদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে, মামলা নং ৮।’
আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) নিয়মিতভাবে দুঃস্থ ও আর্ত মানবতার সেবায় কাজ করে আসছে। বর্তমান পুনাক সভানেত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে সারা দেশে সমাজসেবার কাজ জোরদার করা হয় যা গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।তারই ধারাবাহিকতায় একজন অসুস্থ শিশুর সাহায্য সংক্রান্ত একটি ফেসবুক পোস্ট পুনাক সভানেত্রীর নজরে আসলে তিনি সেই শিশুটির বাবাকে চিকিৎসাপত্রসহ সাহায্য গ্রহণ করার জন্য আহবান করেন।
কিন্তু সাহায্যপ্রার্থী হাজির না হয়ে নানা তাল-বাহানা শুরু করে। পররর্তী সময়ে একই ছবি দিয়ে আরেকটি পোস্ট দেখলে পুনাক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয় এবং তারা সিটিটিসির কাছে বিষয়টি অনুসন্ধান করার অনুরোধ করেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিষয়টি অনুসন্ধান করে জানতে পারে যে, একদল প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেট থেকে দেশ বিদেশের বিভিন্ন অসুস্থ ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছে।
এমএইচ/এমএমএ/