এ কেমন আয়নাবাজি!

চেহারায় মিল নেই। মিল নেই নামেও। এতো অমিল সত্ত্বেও একজনের হয়ে সাজা খেটে যাচ্ছেন অন্যজন। অবশেষে কভিড টিকা নিতে গিয়ে ধরা পড়েন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী সোহাগ।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) র্যাব মিডিয়া সেন্টার আয়োজন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি মাহফুজুর রহমান ।
তিনি বলেন, এ মামলার এক আসামির সঙ্গে অন্য জনের চেহারায় কোন মিল নাই। বিষয়টি কারো নজরে এখনো আসে নাই। র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা থাকার কারণে এটি নজরে আসে। চেহারার মিল ছাড়াই ঘটেছে আয়নাবাজির ঘটনা। সোহাগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২ টি হত্যা মামলা, ২ টি অস্ত্র মামলা ও ৬ টি মাদক মামলাসহ সর্বমোট ১০ টি মামলা রয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর কদমতলী থানাধীন আউটার সার্কুলার রোডে নোয়াখালী পট্টিতে নান্নু জেনারেল ষ্টোর এর সামনে একটি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।সোহাগ ওরফে বড় সোহাগ, মামুন, সোহাগ ওরফে ছোট সোহাগ (৩০)সহ আরো ৩/৪ জন অজ্ঞাত আসামি করে মামলা হয় কদমতলী থানায়। পরে ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর ১ নম্বর আসামি সোহাগের অনুপস্থিতিতে আদালত রায় প্রকাশ করেন। সোহাগের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত।
এডিশনাল ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, আদালতের রায় প্রকাশের পর আসল সোহাগ পরিকল্পনা মোতাবেক তার ফুফাতো ভাই মো. হোসেনকে ২০১৮ সালের পহেলা জানুয়ারিতে আদালতে আত্মসমর্পনপূর্বক জামিন প্রার্থনা করলে আদালত জামিন না-মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মাদকাসক্ত হোসেন টাকার বিনিময়ে সোহাগের হয়ে জেলে যায়। এজন্য হাসানকে প্রতিমাসে ৫ হাজার করে টাকা দিতো সোহাগ।
অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে ২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে র্যাব-১০ এর অপারেশন টিম ও র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা টিম কাজ শুরু করে। এরই মধ্যে বিশেষ দায়রা আদালত ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ প্রকৃত আসামির (সোহাগ) বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে র্যাব-১০ বরাবর অনুলিপি পাঠায়। এরপর প্রকৃত সোহাগ উল্লিখিত ঘটনা প্রকাশের বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে সুকৌশলে দেশত্যাগের চেষ্টা শুরু করে। এর জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করে পাসপোর্ট তৈরি করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা সংগ্রহ করে। দেশত্যাগের ক্ষেত্রে করোনার টিকা বাধ্যতামূলক হওয়ায় শনিবার (২০ জানুয়ারি) করোনার ২য় ডোজ গ্রহণ করার জন্য মিডফোর্ড হাসপাতালে যায়। সেখান থেকে সোহাগকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এনএইচ/
