ইবিএল এটিএম বুথ ৮৪ বার হ্যাক করার চেষ্টা করে চক্রটি
আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং ও স্ক্যামিং চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতারের পর পুলিশ জানিয়েছে দুই দিনের ব্যবধানে তারা অন্তত ৮৪ বার ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) বিভিন্ন বুথ থেকে হ্যাকিং এর মাধ্যমে টাকা তোলার চেষ্টা করেছিল। এই চক্রে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ভারত, বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (১৯ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশান থেকে আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং ও স্ক্যামিং চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন- মো. মফিউল ইসলাম ও তুরস্কের নাগরিক হাক্কান যানবুরকান (HAKAN ZANBURKAN)। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ৫টি মোবাইল, ১টি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেপ্তার হাক্কান তুরস্কের নাগরিক। তিনি আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোনিং স্ক্যামিং চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড। গত ২ জানুয়ারি থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, নিউজল্যান্ড, ইউএসএ, ভারত, তুরস্ক, সৌদিআরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়েসহ প্রায় ৪০ টি দেশের নাগরিকের ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে স্ক্যামিংয়ের মাধ্যমে কমপক্ষে ৮৪ বার টাকা উত্তোলনের জন্য চেষ্টা করেন। ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড এন্টি স্ক্যামিং টেকনোলজি ব্যবহার করায় এ্যালার্ম সিস্টেমের মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত হয়ে স্ক্যামিং রোধ করতে সক্ষম হয়।
তিনি আরো বলেন, হাক্কান ২০১৯ সালে ভারতের আসাম রাজ্যের পল্টনবাজার পুলিশ স্টেশনের এটিএম স্ক্যামিং মামলায় অন্য এক তুরস্কের নাগরিক এবং ২ বাংলাদেশিসহ গ্রেফতার হন। ওই ঘটনায় মি. হাক্কানসহ তারা ভারতের বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে কার্ড ক্লোনিং করে প্রায় ১০ লাখ রুপি আত্মসাৎ করেন।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, ভারতে প্রায় ২০ মাস জেলে থাকার সময় আগরতলার GOVIND BALLABH PANT HOSPITAL (GBP HOSPITAL) এ পুলিশি হেফাজত থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাক্কান সুকৌশলে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে এক ভারতীয় ব্যক্তির সহায়তায় দুই লাখ রুপির বিনিময়ে সিকিম হয়ে নেপালে পৌঁছান। সেখান থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিজ দেশে ফিরে যান। পরে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর হাক্কান পুনরায় বাংলাদেশে আসেন। তিনি রাজধানীর দ্যা ক্যাপিটাল হোটেল অবস্থান করে এটিএম বুথ হ্যাকিং এর পরিকল্পনা করেন।
এনএইচ/এএস