আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সর্বস্ব লুটে নেয় চক্রটি
রাজধানীর লক্ষ্মীবাজারের একটি রেস্তোরাঁয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ ডাকাত চক্রের সদস্যদের বৈঠকের তথ্য ছিল পুলিশের কাছে। সেখানে গিয়ে সত্যতাও পাওয়া যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ ডাকাতদলটি গত বছরের ৬ অক্টোবর শরীয়তপুরের এক ব্যবসায়ীকে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় প্রশাসনের লোক পরিচয় দিয়ে তার গতিরোধ করে। পরে তার সঙ্গে থাকা ৪১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
চক্রটিকে গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রাখে গোয়েন্দা পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় পটুয়াখালীতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় চক্রের অন্যতম সদস্য কাউসারকে। উদ্ধার করা হয় ১১ লাখ টাকা।
শুক্রবার (৩ ফ্রেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান ডিআইজি হারুন অর রশিদ এসব তথ্য জানান।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ডাকাতদলটির মূল হোতা মাহতাবকে। তদন্তে বেরিয়ে আসে তারা কীভাবে বছরের পর বছর ধরে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় ডাকাতি করে আসছে। চক্রের দুই সদস্য জামাল ও মজিবর রাজধানীর সদরঘাট, তাঁতীবাজার ও গুলিস্তান এলাকায় কখনো ফল বিক্রেতা, কখনো মাস্ক বিক্রেতা হিসেবে ঘুরে ঘুরে টার্গেট নির্ধারণ করে। স্বর্ণ ও হুন্ডি ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক থেকে নগদ টাকা উত্তোলনকারীদের তথ্য তারা জানিয়ে দেয় মাহতাব ও কাউসারকে।
পুলিশ বলছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়েই মূলত টার্গেট ব্যক্তিকে থামিয়ে সব ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, সাধারণত ভুক্তভোগীরা প্রাণের ভয়ে তাদের (ডাকাত) পরিচয় জানতে চায় না। ডাকাতরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিলে কার্ডও দেখতে চায় না। এ কারণে সুযোগ নিয়ে থাকে তারা।
ডাকাতদলের দুই সদস্য মাহতাব ও কাউসার ডাকাতির টাকা দিয়ে পটুয়াখালীতে ঠিকাদারি ব্যবসা করে। স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত। এলাকায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে তারা বাড়ি তৈরি করছে।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত সে এলাকায় কোন দল করে সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমাদের কাছে তার পরিচয় সে একজন ডাকাত। তার বিরুদ্ধে যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, আমরা তা-ই করব।
কেএম/এসজি