‘যাত্রাবাড়ীতে ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে মারা যান খলু মিয়া’
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় খলু মিয়া নামের এক যুবকের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত মো. আরিফ নামের সংঘবদ্ধ চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের সময় তার হেফাজত হতে ছিনতাইকৃত একটি মোবাইল জব্দ করা হয়। পুলিশ জানায়, মায়ের সঙ্গে ছেলের ফোনালাপের সূত্রে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়। তা ছাড়া, ছিনতাইয়ের কবলে পড়ে মারা যান খলু মিয়া।
রবিবার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং এই ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।
হাফিজ আক্তার জানান, গত ২২ জানুয়ারি ভোর পাঁচটায় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের চৌকস একটি মোবাইল টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, যাত্রাবাড়ী থানাধীন ধলপুর এলাকায় একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি ছিনতাইকারী কর্তৃক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে। সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে মোবাইল টিম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমক মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীকালে মোবাইল টিমের ইনচার্জ এসআই শামীম রেজা ভিকটিমের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন।
তিনি আরও জানান, পরে মোবাইল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে এর আশে পাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, ভিকটিমের কাছে প্রাপ্ত জিনিসপত্র ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে জানতে পারেন যে, মৃত ব্যক্তি (ভিকটিম) খলু মিয়া (২৮) ঢাকার নারায়ণগঞ্জের রূপসী এলাকায় গার্মেন্টসে কাজ করতেন। গতগত ২২ জানুয়ারি গাইবান্ধা থেকে সোনালী পরিবহনে খলু মিয়া (২৮) রাত অনুমান সাড়ে ৩টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন গোলাপবাগ পৌঁছায়। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, ভিকটিম গোলাপবাগ থেকে পাঁয়ে হেঁটে ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দিয়ে মায়ের দোয়া টায়ার অ্যান্ড ব্যাটারি শপের সামনে পৌঁছালে পূর্ব হতে ওঁৎ পেতে থাকা অজ্ঞাতনামা কতিপয় ছিনতাইকারী ভিকটিমকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার আরিফ জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত একাধিক ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় সে দীর্ঘদিন যাবৎ তার নিজ বাসায় অবস্থান না করে পলাতক ছিল। কিন্তু অত্র মামলার ঘটনার পরপর পুলিশি তৎপরতা দেখে হত্যার ঘটনা হতে নিজেকে রক্ষা করার জন্য এবং হত্যা ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে ঘটনার পরদিন পূর্বের ওয়ারেন্ট মূলে গ্রেপ্তার হতে নিজের বাসায় অবস্থান করেন। ওইদিন রাতেই পুলিশ পূর্বের ওয়ারেন্টে আরিফকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
আভিযানিক দল জেলহাজতে গিয়ে আসামি মো. আরিফকে সনাক্ত করে তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গ্রেপ্তারকৃত আরিফ বিজ্ঞ আদালতে নিজের দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে তার অপরাপর সহযোগীদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে।
পলাতক অপর আসামি সোহেলসহ উক্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানায় পুলিশের এই কর্মকর্তা।
কেএম/এমএমএ/