টাকার লোভেই সাঈদাকে খুন করে রাজমিস্ত্রী: পুলিশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক সাঈদা গাফফারকে হত্যার ঘটনায় এক ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, টাকার লোভেই তাকে খুন করে আনোয়ারুল ইসলাম নামের সেই রাজমিস্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) গাইবান্ধা থেকে আনোয়ারুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সাঈদা গাফফারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়না তদন্তের জন্য তার মরদেহ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
সাঈদা গাফফার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি অবসরে যান। তিনি কাশিমপুর থানার দক্ষিণ পানিশাইল এলাকায় একটি তিন তলা ভবনের দোতলায় ভাড়া থাকতেন। তার স্বামী প্রয়াত কিবরিয়াউল খালেকও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তাদের চার সন্তানের মধ্যে দুই মেয়ে থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। এক মেয়ে ঢাকার উত্তরায় এবং ছেলে মতিঝিলে থাকেন। দুদিন ধরে নিখোঁজ জানিয়ে থানায় জিডি করেছিলেন তার মেয়ে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আনোয়ারুল ইসলাম গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর থানার বুজুর্গ জামালপুর গ্রামের আনসার আলীর ছেলে। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। থাকতেন গাজীপুরের কাশিমপুরে। সেখানে একটি ফ্ল্যাট নির্মাণ করছিলেন শিক্ষক সাঈদা গাফফার। আর তার ওই নির্মাণ কাজের দায়িত্বে ছিলেন আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে কাশিমপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দীপঙ্কর রায় জানান, প্রকল্প এলাকার ভেতরে নির্জন জায়গায় অধ্যাপক সাঈদার সঙ্গে থাকা টাকার লোভে পড়ে যান আনোয়ার। আনোয়ার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে সাইদা চিৎকার করেন। তখন গলার ওড়না চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে আনোয়ার। তারপর থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে রাতেই গাইবান্ধায় পালিয়ে যায় সে। পরে গত ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর থেকে পরিবারের লোকজন ফোন করে সাঈদার সাড়া পাচ্ছিল না। পরদিন তার মেয়ে সাহিদা আফরিন এ ব্যাপারে কাশিমপুর থানায় একটি জিডি করেন।
দীপঙ্কর রায় আরও জানান, ওই জিডির তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, সাঈদার নির্মাণাধীন ফ্ল্যাটে দিনের কাজ শেষে ১১ জানুয়ারি আনোয়ারুলসহ শ্রমিকরা সবাই চলে যায়। পরদিন সকালে অন্যরা কাজে যোগ দিলেও আনোয়ারুল অনুপস্থিত ছিলেন। এরপর পুলিশ তার খোঁজ শুরু করে। পরে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে গাইবান্ধা থেকে আটক করা হয় আনোয়ারুলকে। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অধ্যাপক সাঈদার নবনির্মিত ফ্ল্যাট থেকে দুইশ গজ দূরে ঝোঁপের ভেতর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এনএইচ/এএস