দেশে অবৈধভাবে ব্যবসা করছে হাজারো বেশি মানি এক্সচেঞ্জ: সিআইডি
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান ২৩৫টি। তবে এর বাইরে সারা দেশে অবৈধভাবে ব্যবসা করছে আরও হাজারের বেশি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান।
একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে কয়েক শ’ প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা ফোনে ফোনে, ব্যাগ কাঁধে ঘুরে ঘুরে অবৈধভাবে বেচাকেনা করছে দেশি-বিদেশি মুদ্রা।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এ তথ্য জানান।
সিআইডি জানায়, প্রাতিষ্ঠানিক কিংবা অপ্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় পরিচালিত অবৈধভাবে মানি এক্সচেঞ্জ'র আড়ালে মানি লন্ডারিং করে আসছে।
মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) একযোগে রাজধানীর পাঁচটি স্থানে অভিযান চালায় সিআইডি। তিনটি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ অফিস হচ্ছে গুলশানের জেএমসিএইচ প্রাইভেট লিমিটেড, মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের আলম অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং উত্তরার আশকোনা মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের তৈমুর মানি এক্সচেঞ্জ। বাকি দুটি ফেরারি প্রতিষ্ঠান। এ সময় পাঁচ প্রতিষ্ঠানের ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন-আবু তালহা ওরফে তাহারত ইসলাম তোহা, আছাদুল শেখ, হাছান মোল্যা, আব্দুল কুদ্দুস, হাসনাত এ চৌধুরী, শামসুল হুদা চৌধুরী ওরফে রিপন, সুমন মিয়া, তপন কুমার দাস, আব্দুল কুদ্দুস, কামরুজ্জামান রাসেল, মনিরুজ্জামান, নেওয়াজ বিশ্বাস, আবুল হাসনাত এবং শাহজাহান সরকার।
অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ টিমের তথ্য ও সহযোগিতায় রাজধানীর গুলশান-১, রিংরোড, মোহাম্মদপুর, উত্তরার আশকোনা, এবি মার্কেট, চায়না মার্কেটে একযোগে পাঁচজন বিশেষ পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকায় অবৈধ। অভিযানে বিপুল পরিমান দেশি-বিদেশি মুদ্রাও জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তাররা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজস্ব অফিস এবং ভাসমান যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি (লাইসেন্স) ব্যতীত বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল।
সিআইডি প্রধান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিল।
তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে
অতিরিক্ত আইজিপি সাধারণ মানুষের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, যখন কোনো কাজে, চিকিৎসা বিদেশে যাচ্ছেন তার আগে কিছু প্রক্রিয়া আছে। ভিসা পাবার পর তিনি বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংকে ভিসা দেখালে বিদেশি মুদ্রা পাবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তা দিতে বাধ্য।
এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর কোনো গাফিলতি রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মাদ আলী বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে।
উল্লেখ্য, ডলারের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তায় সিআইডি ইতোমধ্যে বেশ কিছু অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
কেএম/এমএমএ/