ফের সক্রিয় স্বাস্থ্যখাতের ‘শাহেদরা’!

করোনা ভাইরাসের নতুন ধরণ অমিক্রন নিয়ে যখন সবাই উদ্বিগ্ন, ঠিক সেই সময় ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্যখাতের প্রতারকরা। তারা মূলত রোগীদের ভুল চিকিৎসার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের অর্থ। আর তাদের এই প্রতারণার বলি হচ্ছেন দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে রাজধানীতে আসা সাধারণ মানুষ।
ঠান্ডাজনিত সমস্যায় আক্রান্ত যমজ বাচ্চা নিয়ে গত শনিবার (১ জানুয়ারি) ঢাকায় আসেন মা আয়েশা বেগম। বাচ্চা দুটিকে ভর্তি করান সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (এনআইসিইউ) না থাকার কথা জানিয়ে রোববার (২ জানুয়ারি) দালালরা শিশু দুটিকে শ্যামলীর আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিল পরিশোধ না করায় হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয় যমজ শিশুসহ তাদের স্বজনকে। পরে রাত সাড়ে ৭ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে আহমেদ (৬ মাস) নামে এক শিশুকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আরেক শিশু আব্দুল্লাহকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় অবহেলা জনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে ওই হাসপাতালের মালিক ও পরিচালকসহ অজ্ঞাত আরো দুজনকে আসামি করে মামলা করেন আয়েশা বেগম। ওই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে শ্যামলীর আমার বাংলাদেশ হাসপাতালে অভিযান চালায় র্যাব।
কয়েক ঘন্টার ওই অভিযান শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালটিতে দুটি আইসিইউ থাকার কথা, কিন্তু সেখানে ৬টি আইসিইউ অর্থাৎ ৪টি আইসিইউ বেশী। এরমধ্যে ভেন্টিলেটর রয়েছে মাত্র দু‘টিতে। ৯টি এনআইসিইউ থাকলেও ইনকিউভেটর মাত্র একটি। করোনাকালে আইসিইউ’র চাহিদা বেশি থাকার সুযোগে অধিক মুনাফার ফাঁদ হিসেবেই অনুমোদন ছাড়াই চলছিল অতিরিক্ত চারটি আইসিইউ।
শুধু তাই নয়, আর ৩০টি সাধারণ বেড থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ১৫টি। পরিচালনার বিধি মোতাবেক ৬ জন নার্স থাকার কথা থাকলেও নার্স রয়েছে মাত্র দুজন। আর তিনজন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও একজন চিকিৎসকের দায়িত্বে চলছিল আমার বাংলাদেশ হাসপাতালটির সার্বিক ব্যবস্থাপনা। যদিও সেই নার্স ও চিকিৎসক আইসিইউ ও এনআইসিইউ পরিচালনার মতো অভিজ্ঞ ছিলেন না।
হাসপাতালটির এমন পরিস্থিতি দেখে ফের স্বাস্থ্যখাতের শাহেদদের সক্রিয় হয়ে ওঠার ইঙ্গিত আসে ওই সংবাদ সম্মেলনে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনার প্রথম ধাক্কাতে ভুয়া পরীক্ষা করে যেমন রিজেন্ট হাসপাতাল শাহেদ মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ছিলেন, এবারও যেমন তেমন কিছু না হয় সে জন্য আমরা তৎপর রয়েছি।
এনএইচ/এএস
