দেশের সীমান্ত এলাকা থেকে গত ডিসেম্বর মাসে ১২০ কোটি ৮৩ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকার চোরাচালান পণ্য সামগ্রী, মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) বিজিবি সদর দপ্তর থেকে চোরাচালান ও মাদক জব্দের এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবি জানায়, অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৫টি পিস্তল, ১টি এসএমজি, ৫টি বিভিন্ন প্রকার গান, ৮টি ম্যাগাজিন, ১৮ রাউন্ড গুলি এবং ৩৫টি খালি খোসা।
এ ছাড়া সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৯০ জন চোরাচালানীকে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ২২০ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ১০ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
জব্দকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে ১৬ লাখ ১ হাজার ৬৭৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩ কেজি ১১০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১৯ হাজার ৫৬২ বোতল ফেনসিডিল, ১৭ হাজার ৮৬১ বোতল বিদেশী মদ, ১ হাজার ৭০৪ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৬৯৩ কেজি গাঁজা, ৯ কেজি ২৯৮ গ্রাম হেরোইন, ১৫ হাজার ৭৫৬টি ইনজেকশন, ৪ হাজার ৭৬৫টি ইস্কাফ সিরাপ, ৩ হাজার ১১১ বোতল এমকেডিল/কফিডিল, ৮ হাজার ৩৯৮টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ৯৫ হাজার ১৫২টি অন্যান্য ট্যাবলেট।
জব্দকৃত অন্যান্য চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১৫ কেজি ২৬৭ গ্রাম স্বর্ণ, ৬২ কেজি ৬৮০ গ্রাম রূপা, ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩২১টি প্রসাধনী সামগ্রী, ১ হাজার ৭৫৫টি ইমিটেশন গহনা, ১০ হাজার ৪৩৮টি শাড়ী, ৫ হাজার ৩৮টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ১ হাজার ৫১ মিটার থান কাপড়, ১ হাজার ৯৫০ ঘনফুট কাঠ, ১০ হাজার ৯৪৯ কেজি চা পাতা, ১৩০ কেজি গ্যামাক্সিন পাউডার, ১৪ হাজার ৯০০ কেজি কয়লা, ৪টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ৯টি ট্রাক/কাভার্ডভ্যান, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ১৩টি পিকআপ, ৪৪টি সিএনজি/ইজিবাইক এবং ৬৬টি মোটর সাইকেল।
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন জনসমর্থন। শুধু আত্মপ্রকাশই যথেষ্ট নয়। জাতীয় নির্বাচনে প্রমাণ হবে দলটির জনপ্রিয়তা। এমনটাই মনে করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে না পারলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ভোটের মাঠে জায়গা করা কঠিন হবে নাগরিক পার্টির।
রক্ত দিয়ে যারা অবরুদ্ধ স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন জনতার হাতে, তাদের নেতৃত্বেই নতুন এই রাজনৈতিক দল। বিপ্লবীদের শপথ, স্বৈরতন্ত্রের কবর রচনা করে গণতন্ত্রের পথে হাটবে বাংলাদেশ। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। বিভাজনের রাজনীতি পরিহার করে ঐক্যবদ্ধ রাজনীতির শপথ নেন নেতারা।
তবে দলটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মূলধারার রাজনৈতিক দলের নেতারা। বিএনপি মনে করে আগামী নির্বাচন ঘিরে জনসমর্থনই দলটির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।
হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে প্রকাশ্যে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এবার ট্রাম্পের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জন্য জেলেনস্কিকে ক্ষমা চাইতে বেলেছেন শীর্ষ
মার্কিন কূটনীতিক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
ওভাল অফিসের আলোচনা তর্ক-বিতর্কের পর সিএনএনকে রুবিও বলেন, ‘জেলেনস্কির উচিত আমাদের সময় নষ্ট করার জন্য ক্ষমা চাওয়া’।
রুবিও প্রশ্ন তুলেছেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার আক্রমণের পর তিন বছর কেটে গেছে, বেশি সময় ধরে যুদ্ধ সহ্য করে এখন কি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি যুদ্ধের অবসান চান না?
তিনি বলেন, ‘তার এগুলোর মধ্যে এসে দ্বন্দ্বে জড়ানোর দরকার নেই। আপনি যখন আক্রমণাত্মকভাবে কথা বলতে শুরু করবেন—এবং প্রেসিডেন্ট হলেন মধ্যস্থতাকারী, তিনি সারাজীবন এটা করেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘হয়তো জেলেনস্কি শান্তি চুক্তি চান না, এটাই বোঝা যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘তিনি চানও আবার সম্ভবত তিনি চান না।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ওই বৈঠক চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যখন জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন হোয়াইট হাউসে আসতে পারেন।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের বরাতে সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট- ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে।
শুক্রবার বৈঠকের পর ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন, হোয়াইট হাউসে শুক্রবার অর্থবহ মিটিং করেছি।
এত চাপ ও উত্তেজনার মধ্যে এমন কিছু শেখা গেছে, যা কথা না বললে কখনো বোঝা যেত না। আবেগের মধ্য দিয়ে যা বেরিয়ে আসে তা আশ্চর্যজনক, আমি স্থির হয়েছি যে জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত না। এতে যদি আমেরিকা যুক্ত থাকে, কারণ তিনি মনে করেন আমাদের যুক্ত থাকার ফলে আলোচনায় তার একটা বড় সুবিধা হবে। আমি সুবিধা চাই না, শান্তি চাই।
ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি (জেলেনস্কি) যখন শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন তিনি আসতে পারেন। তিনি প্রিয় ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করেছেন।
বৈঠকের শুরুতে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের বিষয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা। যখন তাদের বাদানুবাদ চলছিল, তখন বৈঠকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতকে মাথায় হাত অবস্থায় দেখা গেছে। এই বৈঠকের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেনের খনিজসম্পদ নিয়ে শুক্রবার তার সঙ্গে জেলেনস্কির চুক্তি সই হবে। গতকাল শুক্রবার রাত ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইউক্রেন যুদ্ধের পুরো পরিস্থিতি যেন উল্টে যেতে বসেছে।
এর আগে, বৈঠকে জেলেনস্কি প্রকাশ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের নরম দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন। তিনি বলেন, ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কোনওভাবেই আপোস হওয়া উচিত নয়।
ওদিকে ট্রাম্প বলেন, পুতিন একটি চুক্তি করতে চান। রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করতে চাইলে ইউক্রেনকে কিছু ছাড় দিতে হবে। একপর্যায়ে গর্জে উঠে জেলেনস্কিকে ট্রাম্প বলেন, আপনি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন।
ক্ষুব্ধ ট্রাম্প জেলেনস্কিকে আরো বলেন, আপনি বড় সংকটে রয়েছেন। আপনি এটা (যুদ্ধ) জিততে পারবেন না। একটি চুক্তি করুন, নইলে আমরা বেরিয়ে যাই। এসময় জেলেনস্কিকে আরো কৃতজ্ঞ হতেও বলেন তিনি। ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জেলেনস্কিকে ‘অভদ্র’ও বলে বসেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের হোয়াইট হাউস সংবাদদাতারা এ বৈঠককে উত্তেজনার এক নজিরবিহীন মুহূর্ত বলে বর্ণনা করেছেন। দুই দেশের দুই শীর্ষ নেতার এমন আচরণে, বিশেষত রাষ্ট্রীয় শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে যাবতীয় কূটনৈতিক শিষ্টাচারকে জলাঞ্জলি দেওয়ার এই ঘটনায় গোটা বিশ্ব স্তব্ধ হয়ে গেছে বলা যায়।
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ভোলা জেলার ১০ গ্রামে রোজা রেখেছেন অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ। জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে থাকা সুরেশ্বরী দরবার শরিফ ও সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা রোজা রাখেন।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তারাবি নামাজ আদায় করে আজ শনিবার ০১ মার্চ থেকে তাদের প্রথম রোজা শুরু হয়েছে।
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামে সুরেশ্বরী ও মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীরা সবচেয়ে বেশি। জেলায় তাদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার হলেও টবগী ইউনিয়নে রয়েছে প্রায় তিন হাজারের মতো।
মুলাইপত্তন গ্রামের আমিন মিয়া চৌকিদার বাড়ি দরজা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিবার তাদের অনুসারীরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন। এ জন্য শুক্রবার ওই মসজিদে তিনি রাত ৯টায় প্রথম তারাবির নামাজ শুরু করেছেন। একদিন আগেই রোজা শুরু ভোলার ১০ গ্রামে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. মাসুদ পারভেজ রহিম জানান, প্রতি বছরের মতো এ বছরও তারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন। শুক্রবার থেকে তাদের প্রথম তারাবি ও শনিবার থেকে প্রথম রোজা শুরু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ভোলা জেলার সদর, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখান, তজুমদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার ১০টি গ্রামে সুরেশ্বরী দরবার শরিফ ও সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফ অনুসারী মানুষের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে তাদের টবগী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামে।