ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় তানিয়াকে হত্যা
রাজধানীর সবুজবাগে তানিয়া আফরোজকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসি মেরামতের কথা বলে ঘরে ঢুকে মালামাল লুট করিছল। এতে বাধা দেওয়ায় তানিয়াকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন- বাপ্পি, সুমন হোসেন হৃদয় ও রুবেল।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর পল্টন থানায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মতিঝিল বিভাগের পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদ।
এর আগে গত শনিবার (২৬ মার্চ) বিকেলে সবুজবাগের দক্ষিণগাঁও বেগুনবাড়ি এলাকায় নিজ বাসা থেকে তানিয়া আফরোজ মুক্তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মাথায়, ঘাড়ে ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল।
ডিসি আব্দুল আহাদ বলেন, প্রথমে বাপ্পিকে ঝালকাঠি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রুবেল ও হৃদয়কে রাজধানীর রামপুরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এসি মেরামতের কথা বলে বিভিন্ন বাসায় গিয়ে ডাকাতি করতেন তারা।
তিনি বলেন, বেগুনবাড়ী দাগ মাস্টার বাড়ি রোডের একটি ভাড়া বাসার দ্বিতীয় তলার ভাড়াটিয়া ময়নুল ইসলাম। তিনি স্ত্রী তানিয়া আফরোজ ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকতেন। ময়নুল ইসলাম ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টেকনোলোজিস্ট পদে চাকরি করেন। গত ২২ মার্চ ময়নুল ইসলাম কর্মস্থলে যান। ২৬ মার্চ বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পূর্ব পরিচিত এসি মেরামতকারী বাপ্পী, তার সহকর্মী সুমন হোসেন হৃদয়কে নিয়ে ময়নুল ইসলামের বাসার নিচে আসেন। বাসায় আগেও এসির কাজ করার সুবাদে বাপ্পীকে চিনতে পারেন তানিয়া।
আব্দুল আহাদ আরও বলেন, এরপর স্বামীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে বাপ্পী ও হৃদয়কে নিয়ে বাসায় যান তানিয়া। বাসায় ঢুকে বাপ্পি ও হৃদয় প্রথম আধা ঘণ্টা এসি মেরামতের কাজ করেন। একপর্যায়ে বাপ্পি নিচে নেমে জিআই তার ও আরেক সহযোগী রুবেলকে নিয়ে ফেরেন। রুবেলকে দেখে তার বিষয়ে বাপ্পির কাছে জানতে চান তানিয়া। বাপ্পি তখন জানান, রুবেল তাদের সঙ্গে এসি মেরামতের কাজ করতে এসেছেন। একসময় তানিয়া দেখতে পান বাপ্পি ও রুবেল ঘরের আলমারি খুলে জিনিসপত্র এলোমেলো করছেন। তখন তিনি জোরে চিৎকার দেন।
তিনি বলেন, তার চিৎকারের পরই রুবেল তানিয়ার মুখ চেপে ধরে বালিশ চাপা দেন। এসময় বাপ্পি তার ব্যাগে থাকা চাপাতি বের করে তানিয়ার মাথায় ও ঘাড়ে তিনটি কোপ এবং পিঠে একটি কোপ মারেন। এতে নিস্তেজ হয়ে পড়েন তানিয়া। হত্যার এ দৃশ্য তানিয়ার মেয়ে মাইমুনা জাহান দেখে ফেলে কান্না শুরু করে। তার সঙ্গে কান্না শুরু করে ১০ মাসের বাচ্চা তানভীরুল ইসলামও। হত্যাকারীরা স্কচটেপ দিয়ে তাদের মুখ বেঁধে দেয়। পরে তাদের হাত-পা বেঁধে রাখেন তারা।
এরপর হত্যাকারীরা টাকা ও স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে চলে যান।
আব্দুল আহাদ বলেন, তারা মূলত বাসায় এসেছিল ডাকাতির উদ্দেশ্যে। এসি মেরামত করা তাদের একটি নাটক ছিল। এর আগে বাপ্পি এসি মেরামতের নামে আরও কয়েকটি বাসায় এমন ডাকাতি করেছে। লুণ্ঠিত মালামাল ও আলামত উদ্ধারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে বাপ্পির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
কেএম/এসএন