সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড
যুক্তরাষ্টে ডিএনএ টেস্টে ২৫ জনের ছাপ, রিপোর্ট র্যাবের হাতে
যুক্তরাষ্ট্রে সাগর সারোয়ার এবং মেহেরুন রুনির হত্যাকাণ্ডের পর সংগ্রহ করা আলামত থেকে ডিএনএ পরীক্ষায় ২৫ জনের ছাপ পাওয়া গেছে। ভয়েজ অব বাংলার অনলাইনে প্রকাশিত এক খবরে এমনটাই দাবি করো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো ওই আলামতগুলোর ডিএনএ টেস্টের ফল হাতে পেয়েছে ঘটনার তদন্তের দায়িত্বে থাকা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- র্যাব। বলা হচ্ছিল মামলার গুরুত্বপূর্ণ কিছু আলামতের ডিএনএ টেস্টের ফল পেলে তদন্তে অগ্রগতি হতে পারে।
দশ বছর আগে ঢাকার রাজাবাজারের বাসায় নৃশংস খুনের শিকার হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি। হত্যাকাণ্ডের ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও এই হত্যাকাণ্ডের মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। জানা যায়নি হত্যাকাণ্ডের কারণ। মামলা দায়েরের পর ৮৫ বার পেছানো হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ।
র্যাব কর্মকর্তারা মনে করছেন, হাতে আসা ডিএনএ টেস্টের ফল পর্যালোচনায় র্যাব সিআইডিসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য ইউনিটের বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তাদের পরামর্শও গ্রহণ করবে। ডিএনএ টেস্টে পাওয়া ছাপের সঙ্গে সন্দেহভাজন কারও ছাপ মিলে গেলে পরবর্তীদের মামলায় আসামি করা হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত এমন কারও বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা।
সাগররুনি হত্যাকাণ্ডের ৯ ধরনের আলামত ডিএনএ টেস্টের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল একটি ছুরি, একটি ছুরির বাঁট, সাগর ও রুনির রক্তমাখা জামাকাপড়ের অংশ, সাগরের হাতপায়ে বাঁধা দড়ির অংশ, সাগরের মোজা ও একটি কম্বল। এছাড়াও ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে ভিসেরা, ফুট প্রিন্ট ও ফিঙ্গার প্রিন্ট।
র্যাব বলছে, যে ২৫জনের ছাপ পাওয়া গেছে তাদের তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। র্যাব'র আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, ডিএনএ টেস্টে যাদের ছাপ পাওয়া গেছে তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে খুনের সঙ্গে জড়িত বলার কোনো সুযোগ নেই।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজাবাজারের নিজ বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন সাংবাদিক সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি দম্পতি। এ ঘটনায় মেহেরুন রুনির ছোট ভাই নওশের রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন। দায়ের করা মামলাটির প্রথমে তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। ওই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর। তবে এর দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় র্যাবকে। সেই থেকে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলার কোনো অগ্রগতি নেই।
র্যাব সূত্র জানিয়েছে, তদন্তভার পাওয়ার পর অন্তত ৯৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে র্যাব। এদের মধ্যে যাচাইবাছাই শেষে অধিকতর সন্দেহভাজন কয়েকজনের তালিকাও তৈরি করা হয়েছিল। হাতে পাওয়া পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রতিবেদন এর সঙ্গে তাদের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে বরাবরই হতাশা প্রকাশ করে আসছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো। প্রতি বছরই হত্যাকাণ্ডের বার্ষিকীর দিন বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করে থাকে বিভিন্ন সংগঠন।