নৌশ্রমিকদের ধর্মঘটে ২য় দিনেও ফাঁকা সদরঘাট, যাত্রীদের ভোগান্তি
নৌযান শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধিসহ ১০ দফা দাবিতে ডাকা অনির্দিষ্টকাল কর্মবিরতির কারণে দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল। শ্রমিকদের ঢাকা ধর্মঘটের ফলে যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। লঞ্চ বন্ধ থাকায় সদরঘাটে এসে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) সকাল থেকে সদরঘাট ঘুরে দেখা যায়, ফাঁকা পড়ে আছে প্লাটুন, নেই লঞ্চের দেখা, লঞ্চগুলো রাখা হয়েছে শ্যামবাজার ঘাটে। টার্মিনালে নেই লঞ্চের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকেরা। টার্মিনালের সামনে অনেক যাত্রীই এসে দাঁড়িয়ে আছেন, অপেক্ষা করছেন লঞ্চ ছাড়বে আশায়। অনেকেই বিকল্প বাহন হিসেবে পিকাপ ও মাইক্রোবাস ভাড়া করছেন গন্তব্যে পৌঁছাতে।
ঢাকায় ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন রহমান মিয়া। চাঁদপুর যাওয়ার জন্য ঘাটে এসে বিপাকে পড়েছেন তিনি। ঢাকাপ্রকাশ-কে তিনি বলেন, ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম। এখন এখানে এসে দেখি লঞ্চ বন্ধ। অনেকেই পিকাপে বাড়ি যাচ্ছি। ভাড়াও বেশি নিচ্ছে। বাড়িতো যেতেই হবে, দেখি কীভাবে যাওয়া যায়।
গ্রামে যাওয়ার জন্য পরিবার নিয়ে ঘাটে নিয়ে এসেছেন রায়হান উদ্দিন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে ছুটছেন যাত্রাবাড়ী বাস স্টেশনে। ঢাকাপ্রকাশ-কে তিনি বলেন, এভাবে ধর্মঘট দিলে আমাদের ভোগান্তি হয়। এসে ঘুরে যাচ্ছি, বাসে যেতে অতিরিক্ত ভাড়াও গুণতে হবে। যত দ্রুত ধর্মঘট ছাড়ে ততই ভালো হয়।
নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব আতিকুল ইসলাম টিটু বলেন, 'দ্বিতীয় দিনের মতো নৌযান শ্রমিকদের শতভাগ অংশগ্রহণে সারাদেশে কর্মবিরতি চলছে। আমরা বরাবরই বলছি আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেওয়া হোক, আমরা কর্মসূচি তুলে নেব। কথাবার্তা চলছে আশা করছি দ্রুতই উভয় পক্ষ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে একটা সমাধান বের করা যাবে।'
লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এমনিতেই যাত্রী নেই, আমাদের তেলের টাকা বাকি পড়ে আছে। শ্রমিকদের সঙ্গে মিটিংয়ে বসেছি, কথা চলছে, আবারও বসব, দ্রুত সমাধান করে লঞ্চ চালু করার চেষ্টা চলছে।
নৌ শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-নৌযান শ্রমিকদের বেতন সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস, বাল্কহেডের রাত্রীকালীন চলাচলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা, বাংলাদেশের বন্দরসমূহ থেকে পণ্যপরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রোতাশ্রয় নির্মাণ ও চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহের চলমান কার্যক্রম বন্ধ, কর্মস্থলে ও দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন, বাংলাদেশের বন্দরগুলো থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা ১০০ ভাগ কার্যকর করা।
এমএমএ/