ভাঙা হচ্ছে নীলক্ষেতের অবৈধ ১৪৮ দোকান
রাজধানীর নীলক্ষেতে নকশাবহির্ভূত অবৈধ দোকান ভাঙার অভিযান চালাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। নীলক্ষেত রোড সাইড মার্কেটের (তুলা মার্কেট, লেপ-তোশক মার্কেট) ১৪৮টি দোকান ও নিচতলার নকশাবহির্ভূত পেছনের অংশ এবং ফুটপাতের উপর গড়ে তোলা কার্নিশ অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
রবিবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকে এ অভিযান শুরু হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান। তার সঙ্গে অংশ নিয়েছেন শতাধিক শ্রমিক। সার্বিক পরিস্থিতির নিরাপত্তায় পুলিশের ২২ জন সদস্য।
ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান বলেন, ৩৫টি বৈধ দোকানের উপর অবৈধভাবে দেড় শতাধিক দোকান তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। এটা নজরে আসার পর যারা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেয়রের নির্দেশমতো আমরা অবৈধ দোকানগুলো উচ্ছেদ করছি।
তিনি আরও বলেন, আগামীকালও অভিযান অব্যাহত থাকবে। কবে নাগাদ পরিপূর্ণভাবে অবৈধ স্থাপনা গুলোর আবর্জনা অপসারণ করা যাবে সেটি এখন বলা যাচ্ছে না।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না সিটি করপোরেশন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা। বাকি বিষয় সিটি করপোরেশন জানে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ অভিযানের প্রথম দিনে ভাঙা হবে তৃতীয় তলার সব দোকান। আগামীকাল সোমবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফিফা খানের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনার কথা রয়েছে।
মার্কেটের ব্যবসায়ীদের দাবি, সিটি করপোরেশন অনেকটা জেদের বশেই দোকানগুলো ভাঙছে। এর কারণে বিনিয়োগকারীদের মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি অনেকের ব্যবসা বন্ধেরও উপক্রম হয়েছে।
আব্দুল হান্নান নামে এক মার্কেট ব্যবসায়ী বলেন, মেয়রের সঙ্গে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করেছি, কিন্তু ফল পাইনি। একেক মেয়রের একেক সিদ্ধান্ত নেন। এত টাকা খরচ করে এগুলো করেছি। প্রতি দোকানে ৫/৭ জন কর্মী আছে। এখন আত্মাহত্যা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ক্ষতির পরিমাণ প্রচুর। আর এই দোকান তো আমরা সিটি করপোরেশন থেকেই বরাদ্দ পেয়েছিলাম, অনেক আগের বরাদ্দ। কাগজে সমস্যা থাকলে সেটা সিটি করপোরেশন জানে, আমরা জানি না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৬১ সালে নীলক্ষেত রোড সাইডে অস্থায়ী ভিত্তিতে ৩৭টি দোকান বরাদ্দ দেয় তৎকালীন নগর সংস্থা। অর্ধশতকের বেশি সময় ধরে ওই জায়গায় অস্থায়ী দোকানগুলো যথাযথ নিয়ম মেনে ব্যবসা পরিচালনা করে। এরপর ২০১২ সালে ডিএসসিসি কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা বিধি ভেঙে নিজ খরচে সেখানে আরও ১৪৮টি দোকান বরাদ্দ দেয়। ওই বরাদ্দ বলে দোকান মালিকরা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ৪ কাঠা জায়গাজুড়ে তিনতলা মার্কেট গড়ে তোলেন।
কেএম/এমএমএ/এসএন