আজিমপুরে নিরাপদ খাদ্যের চতুর্থ ‘কৃষকের বাজার’ শুরু
রাজধানীর আজিমপুরে ঢাকা দক্ষিণের চতুর্থ ‘কৃষকের বাজার’ শুরু করা হয়েছে। আজিমপুর রোডে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার সামনে আয়োজিত কৃষকের বাজারে প্রতি শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সাভারের ভাকুর্তা থেকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যাচাইকৃত ১০ জন নিরাপদ চাষি তাদের উৎপাদিত সবজি এবং ফলমূল বিক্রি করবেন।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকালে নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট (ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট) এর সম্মিলিত উদ্যোগে ২৬নং ওয়ার্ডে ‘কৃষকের বাজার’ উদ্বোধন করা হয়।
ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, খাদ্য নিরাপত্তা বা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর বর্তমান সরকার নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের দিকে জোরারোপ করেছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের বিষয়ে জনসচেতনতাও তৈরি হয়েছে। ফলশ্রুতিতে নিরাপদ সবজি চাষ বর্তমানে দেশজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কৃষকদের নিরাপদ চাষে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তাদের পণ্যের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি এবং ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ সবজি-ফল প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার এ ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী সমাধান।
কৃষকের বাজারটি উদ্বোধন করেন আয়োজনের প্রধান অতিথি ডিএসসিসির ২৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারী কাউন্সিলর নিলুফার রহমান।
সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বজলুর রশীদ বলেন, সবজি চাষে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। পাশাপাশি মাটি, পানি, বায়ু দূষিত হয় এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দেশব্যাপী কৃষকদের সবজি চাষে জৈব সার প্রয়োগ এবং পোকা দমনে ফেরোমেন ফাঁদ, আঠালো ফাঁদ ইত্যাদি ব্যবহারে উৎসাহী করছে। কৃষকদের বাজার ব্যবস্থাপনায় সেভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় তারা পণ্যের সঠিক মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কৃষকের বাজারের মতো উদ্যোগগুলো কৃষকদের লাভবান করবে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জয়নাল আবেদীন বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বিশ্বব্যাপী নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে। ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় আমরা এলাকাভিত্তিক কৃষকের বাজার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। কাউন্সিলর কার্যালয়ের সহযোগিতা ছাড়া এ কার্যক্রম সফল করা সম্ভব নয়। কৃষকদের টয়লেট, পানিসহ প্রয়োজনীয় সুবিধাদি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য কাউন্সিলরকে অনুরোধ জানাই।
ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, নিরাপদ খাদ্য গ্রহণের বিষয়ে আমাদের জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে। বিশেষত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নেই। পাশাপাশি ছাদবাগান তৈরিতেও আমাদের জনগণকে আগ্রহী করে তুলতে হবে। এতে একদিকে যেমন নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে, তেমনি নগর অঞ্চলে তাপমাত্রা হ্রাসেও ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।
আরইউ/এসজি