এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা জরিমানা
ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ২০ মামলায় ৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশা নির্মূলে বুধবার (১৯ অক্টোবর) থেকে সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযানের প্রথম দিন এসব মামলা ও জরিমানা করা হয়। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযানের প্রথম দিনে ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলেই একযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন মগবাজার এলাকায় ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো। সেলিম রেজা সপ্তাহব্যাপী বিশেষ অভিযানের উদ্বোধন করেন।
অভিযান উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের মো. সেলিম রেজা বলেন, ‘বর্তমানে পুরো দেশেই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে অক্টোবর মাসেও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে, কিছুক্ষণ পরেই আবার রোদ হচ্ছে। এসব কারণেও ডেঙ্গুর রোগের বাহক এডিস মশা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা যে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হতে পারি। আমাদের সবাইকে এডিস মশা নিধনে সচেতন হতে হবে। সিটি করপোরেশন নিয়মিত মশা নিধনে কাজ করছে। নগরবাসীকেও দায়িত্ব নিতে হবে। কারো বাড়িতে এডিসের লার্ভা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ডিএনসিসির নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের সহযোগিতা পেলে ডেঙ্গু সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সম্ভব। মূলত বাসাবাড়িতেই এডিস মশার জন্ম হয়। নিজেদের বাসাবাড়িতে ফ্রিজ, এসি, ফুলের টব, অব্যবহৃত টায়ার, ডাবের খোসা, চিপসের খোলা প্যাকেট, বিভিন্ন ধরনের খোলা পাত্র, ছাদ কিংবা অন্য কোথাও যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।’
এ সময় মগবাজার এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল বাকী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালে ৫টি নির্মাণাধীন ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ৫টি মামলায় মোট ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এর আওতাধীন কাওরানবাজার এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে একটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অঞ্চল-২ এর আওতাধীন পল্লবী, রূপনগর ও শাহআলী থানা এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান অভযান পরিচালনা করেন। অভিযানে লার্ভা পাওয়ায় ৫টি মামলায় মোট ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
অঞ্চল-৬ এর আওতাধীন উত্তরা ১২ নং সেক্ট্রর এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়া আফরীন অভিযান পরিচালনা করেন। উত্তরা এলাকায় অভিযান পরিচালনাকালে ২টি ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। লার্ভাপ্রাপ্ত স্থানসমূহের লাভা ধ্বংস করে লার্ভাপ্রাপ্ত ২ জন ভবন মালিককে ২টি মামলায় ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অঞ্চল-৮ এর আওতাধীন উত্তরা এলাকায় নিরীক্ষা কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাসির উদ্দিন মাহমুদ অভিযান পরিচালনা করেন। একটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ১টি মামলায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ছাড়া, অঞ্চল-১ এর আওতাধীন ১৭নং ওয়ার্ডের ভাটারা এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান পরিচালনাকালে বাসা বাড়ী ও নির্মানাধীন ভবনে, ফাঁকা প্লট, ড্রেন ঝোপঝাঁড়ে কিউলেক্স মশক বিরোধী অভিযান ও সমন্বিততভাবে এডিশ বিরোধী অভিযানে ৭টি স্থানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ২টি মামলায় মোট ৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং ৫টি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়।
অঞ্চল-৯ এর আওতাধীন ছোলমাইদ এলাকায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল বাসেত অভিযান পরিচালনা করেন।এডিসের লার্ভা পাওয়ায় ২টি মামলায় ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এ ছাড়া, সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে জনসাধারণকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন এবং মাইকিং করে জনসাধারণকে সচেতন করেন।
ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকতা ব্রিগে. জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান এবং উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকতা লে. কর্ণেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার কয়েকটি অঞ্চল পরিদর্শন করেন।
আরইউ/এমএমএ/