ডিম দিয়ে বানানো হয় যে পুরি
সূত্রাপুর মোড়ে চা খেতে খেতে একজন বললেন, ‘বুদ্ধুর ডিম পুরি যে খাইছে, হের মুহে লাইগা আছে, যেমন গ্রাণ, তেমনই টেস্ট’ আলু পুরি, ডাল পুরি, কি না পুরি, টাকি পুরির কথা শুনে থাকলেই ডিম পুরির কথা এই প্রথম শুনলাম।’
সেই ডিম পুরির ইতিবৃত্ত জানতে যাওয়া হয় পুরান ঢাকার সূত্রাপুরের ডালপট্টি মোড়ের হেমন্তদাস রোডে। পুরির দোকানের সামনে যেতেই মনমাতানো ঘ্রাণ আসতে লাগল নাকে। ছোট্ট একটি দোকানে বেশ কয়েকজন কর্মচারী। কেউ কিমা বানাচ্ছেন, কেউ আবার পুরি ভাজছেন আবার কেউ বিক্রি করছেন বিরামহীন। এই দোকানের পুরি কিনতে ক্রেতাদের ভিড় চোখে পড়ার মতো।
জানা যায়, ১৯৬০ সালে সর্বপ্রথম এই দোকান শুরু করেন বুদ্ধু নামের এক বিক্রেতা। শুরু থেকেই মানুষের আস্থা ও সুনাম অর্জন করেছে বুদ্ধুর পুরি। ১৯৯২ সালে মারা গিয়েছেন বুদ্ধু। এখন সেই দোকান দেখবাল করছেন বুদ্ধুর ছেলে ইউসুফ। এক সময়কার ছোট্ট দোকানের সঙ্গে যোগ হয়েছে আরেকটি দোকান। যেখানে বসে এই পুরির স্বাদ নিতে পারবেন ক্রেতারা ৷
বুদ্ধুর পুরির দোকানে নেই কোনো সাইনবোর্ড। যে কাউকে বললেই চিনিয়ে দিবে দোকান। বুদ্ধু র পুরির দোকানে আলু পুরি ছোট (৬ টাকা), আলু পুরি বড় (১০ টাকা), ডিম পুরি (২৫) পাওয়া যায়।
অন্যান্য পুরির সঙ্গে বুদ্ধুর পুরি ব্যতিক্রম। এই পুরির অন্যান্য মশলার সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পুদিনা পাতা মেশানো হয়। এখানে সবচেয়ে বেশি চলে ডিম পুরির। পুরির জন্য তৈরি ময়দার খামির একপাশে কেটে আস্ত ডিম পুরে দিয়ে ভাজা হয় ডিম পুরি। বিক্রেতার সামনে আস্ত কিংবা কেটে পরিবেশন করা হয় ডিম পুরি।
সেই পুরির স্বাদ কেমন তা জানতে পুরি অর্ডার করা হলো। কিছুক্ষণ পরই মচমচে পুরি হাজির টেবিলে। সেই পুরি কামড় দিতেই মুখে লাগল ডিম ও পুদিনা পাতার স্বাদ। অন্যান্য পুরির চেয়ে সত্যিকার অর্থেই অন্যরকম এই পুরি।
প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে এই পুরি বেচাকেনা মাঝে আবার দুই ঘন্টা বিরতি দিয়ে বিকাল থেকে শুরু হয় বেচাকেনা। দিনে প্রায় ২৫০০-৩০০০ পুরি বিক্রি হয় এই দোকানে।
দোকানের বিক্রেতারা জানান, আমরা আমাদের খাবারে খাটি তেল, পুদিনা পাতা, ডাল ব্যবহার করি। ভেজাল কিছু মেশাই না। তাই আমাদের পুরির স্বাদ আগের মতোই আছে। আমাদের বেচাকেনা আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো।
মিরপুর থেকে পুরি খেতে আসা আহসান উল্লাহ জানান, আমি মিরপুর থেকে এসেছি। অনেক বছর ধরেই এদের নাম শুনে আসছি, আসলে পুরিও খুব ভালো। ডিম পুরিটা বেশি মজা লেগেছে।
এমএমএ/