ছোট প্রকল্পেও বাড়াতে হচ্ছে মেয়াদ!
জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজাকে অফিসে রুপান্তরসহ বেশ কিছু উন্নয়নকাজ করতে দেড় বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প নিয়েছিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই কাজের মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
অথচ ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের বরাদ্ধকৃত টাকার ৭০ শতাংশ ব্যয় করা হয়েছে ফার্নিচার কেনা ও কর্মকর্তাদের সম্মানী দিতে। সেই তুলনায় প্রকল্পের বাকি কাজ সেভাবে হয়নি। বাধ্য হয়ে সংসদ ভবনের ছোট প্রকল্পটিও সংশোধন করা হচ্ছে বলে দাবি করছে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
পরিকল্পন কমিশন ও গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজাটি দীর্ঘকাল থেকে স্টোর হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু সংসদ সদস্য ও কর্মকর্তাদের জন্য অফিসের প্রয়োজন হওয়ায় এটি সংস্কার করে অফিস বানানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে উত্তর প্লাজাকে নতুন করে ঢেলে সাজানোসহ স্থপতি লুই আই কানের নকশা অনুযায়ী জাতীয় সংসদ ভবনের বিভিন্ন প্রবেশ গেটে অভ্যর্থনাকক্ষসহ সেন্ট্রি পোস্ট নির্মাণ করার প্রস্তাব করা হয় গত বছর।
এ জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে একটি প্রকল্প তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। তাতে ব্যয় ধরা হয় ৪৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। ৫০ কোটি টাকার কম হওয়ায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ২০২১ সালের ১০ জুন প্রকল্প প্রস্তাবনাটি অনুমোদন দেন।
এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালে ডিসেম্বর পর্যন্ত। অর্থাৎ দেড় বছরে প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা। কাজের মেয়াদ শেষ হতে আরও তিন মাস বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রোকন উদ্দিন বলেন, সংসদ চলাকালীন কাজ করা যায় না। আবার কিছু মালামাল বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এ ছাড়া উত্তর প্লাজার ফ্লোরে স্টোর থাকায় মালামাল অপসারণ করতে দেরি হয়েছে। তাই নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের অন্যান্য কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এ জন্য ছয় মাস বৃদ্ধি করা দরকার। তবে এতে কোনো ধরনের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের আওতায় সংসদ ভবনের উত্তর প্লাজার নিচ তলার আধুনিকায়নের জন্য তিন কোটি ৬৩ লাখ টাকা ফার্নিচার কেনা হয়েছে। ৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকার মধ্যে ৯৫ শতাংশ ইন্টারন্যাল ডেকোরেশনের কাজে ব্যয় করা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের জন্য কম্পিউটার, প্রিন্টার ও স্ক্যানার কেনা হয়েছে পাঁচ লাখ টাকার। স্টেশনারি কেনার জন্য বরাদ্দকৃত দুই লাখ টাকা পুরোটাই ব্যয় করা হয়েছে। সম্মানীভাতা ধরা হয়েছিল চার লাখ টাকা। তাতে আড়াই লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, তবে ছাদের পানিপড়া রোধকল্পে নতুন ব্রিক, মার্বেল পাথর প্রতিস্থাপনসহ অন্যান্য কাজ তেমন হয়নি। এজন্য প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে। তাতে ব্যয় না বাড়িয়ে ছয় মাস অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
এনএইচবি/আরএ/