মিরপুরে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফুটবল খেললেন মেয়র আতিক
রাজধানীর মিরপুর ১১ নং সেকশনের প্যারিস রোড সংলগ্ন উন্মুক্ত স্থানে খেলার মাঠের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম মিরপুরে প্যারিস রোড সংলগ্ন মাঠে উপস্থিত হয়ে দেখেন অসংখ্য শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনগণ খেলার মাঠের দাবিতে অনশন করছেন এবং 'মাঠ চাই, মাঠ চাই' বলে স্লোগান দিচ্ছেন।
এসময় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম অনশনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানান। মেয়রের আশ্বাসে অনশনকারীরা অনশন ভাঙতে রাজি হন। অনশনকারীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান তিনি।
পুরো মাঠের চারপাশ পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, '৩নং ওয়ার্ডের আওতাধীন মিরপুর ১১ এলাকায় প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এই এলাকায় ৬০টিরও বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে যেমন প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা, তেমনই প্রয়োজন মানসিক সুস্থতা। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ এই অঞ্চলে খেলার মাঠ নেই। চারপাশে শুধু ভবন নির্মাণ হচ্ছে।'
সাফ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২২ এ বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুনাম অর্জন করেছে উল্লেখ করে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'খেলাধুলার মাধ্যমেই বিশ্বে বাংলাদেশকে পরিচিত করা যায়। ক্রিকেট ও ফুটবলের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে পরিচিত হয়েছে। সম্প্রতি ভলিবলেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন ক্রীড়াপ্রেমি মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ খেলাধূলায় সফলতা অর্জন করে চলেছে। ছেলে-মেয়েদের খেলাধূলার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া আমাদের দায়িত্ব।’
এসময় মেয়র বলেন, 'খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি জাতীয় দলের অনেক খেলোয়াররা এই প্যারিস রোড মাঠে খেলেছে। এই এলাকার অনেক বয়স্ক মানুষ জানিয়েছেন তারা শৈশবে এই মাঠে খেলেছেন। ড্যাপের নকশায় এটিকে উন্মুক্ত স্থান হিসেবে দেখানো আছে। অথচ জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এই মাঠকে প্লট আকারে বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছে। এটা মেওনে নেয়া যায় না। জনগণের স্বার্থে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই খেলার মাঠ পুনরুদ্ধার করব।'
এই উন্মুক্ত স্থানটিকে খেলার মাঠ হিসেবে ডিএনসিসিকে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পরেই ড্যাপের নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে। নকশায় এটি একটি উন্মুক্ত স্থান। যেখানে কোন স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। ড্যাপের নকশা অনুযায়ী এই উন্মুক্ত স্থানটি ডিএনসিসিকে খেলার মাঠ হিসেবে বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ করছি। বরাদ্দ দেওয়া হলে আমরা একটি আধুনিক খেলার মাঠ নির্মাণ করব। মানুষের হাটার জন্য মাঠের চারপাশে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করব।'
এসময় মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ডিএনসিসির বর্জ্য বিভাগকে তাৎক্ষনিক মাঠের বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দেন। মেয়রের উপস্থিতিতে মাঠের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কারের কার্যক্রম শুরু হয়।
বর্জ্য অপসারণ হলে ডিএনসিসি মেয়র মাঠে প্রবেশ করেন এবং উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফুটবল খেলে আনন্দ ভাগাভাগি করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম, ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী জহিরুল ইসলাম মানিক, ১৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. হুমায়ুন রশীদ (জনি) প্রমুখ।
আরইউ/এএস